যশোর প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগর উপজেলায় হাসিবুর রহমান হাসিব (৯) নামের এক স্কুল ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হাসিবুর উপজেলার একতারপুর গ্রামের মফিজুর মল্লিকের ছোট ছেলে।
রোববার সকালে লাশ উদ্ধারের পর দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। হাসিব একতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে শিশুটির সহপাঠীরা মানববন্ধন করেছে। অন্যদিকে নিহতের চাচা সোহাগ হোসেন বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের মা সাবিনা খাতুন জানান, শনিবার স্কুল থেকে ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে আনুমানিক বিকাল ৪ টায় তার ছেলে ছিপ নিয়ে মাছ ধরতে বের হয়। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা আশপাশের বিভিন্ন পুকুরে খোঁজাখুজি শুরু করেন। এশার আজান পর্যন্ত খোঁজাখুজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ছেলেকে হারানোর সংবাদ প্রচার করা হয়।
তিনি জানান, রোববার সকালে প্রতিবেশী বৃদ্ধা আলীর মা সুপারি খুঁজতে গিয়ে স্থানীয় আকরাম ফারাজীর মেহগনি বাগানে হাসিবকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাসিবের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
হাসিবের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার শিশু সন্তান হত্যার বিচার চাই। কি অপরাধ ছিল আমার ছেলের, যে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হলো?
এদিকে লাশ উদ্ধারের পর দুপুরে একতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাসিব হত্যার বিচার ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন করে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিনা পারভীন বলেন, হাসিব দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। প্রতিদিন স্কুলে আসতো। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ এ হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে না পরলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ উপজেলা চত্বরে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি করতে বাধ্য হবে।
অভয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) রোকিবুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে রাতের কোন এক সময় শিশুটিকে কেউ পরিকল্পিত ভাবে গলাকেটে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। প্রাথমিক তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে দুই ব্যক্তিকে থানায় নেয়া হয়েছে।
ওসি আলমগীর বলেন, নির্মমভাবে শিশুটির গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি তাদের কোন শত্রু ছিল না। নিহতের চাচা সোহাগ হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-৩) দায়ের করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে