গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: অব্যাহত গতিতে ভেঙ্গেই চলেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শৈলদাহ নদী। গত এক মাসের ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নারায়ণখালী গ্রামের গৃহবধূ সবিতা হালদার। স্বামী ও দুই ছেলে নিয়ে সংসার। স্বামী কৃষিজীবী আর দুই ছেলে করছে পড়ালেখা। কিন্তু শৈলদাহ নদীর তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে তাদের তিন বিঘা জমি। ফলে তিনি এখন নি:স্ব প্রায়।
তার মত অবস্থা ওই গ্রামের আরো ৩০ পরিবারের। গত এক মাসের নদী ভাঙ্গনে তারাও হারিয়েছেন তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি। কখন শেষ সম্বলটুকু চলে যাবে নদীগর্ভে সেই আতঙ্কে রাত কাটছে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শৈলদাহ নদীর ভাঙ্গন চলছে তীব্র গতিতে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে জমি, ঘর-বাড়ি। গত এক মাসের নদী ভাঙ্গনে অনেকেই নিঃস্ব। অনেকে নিজেদের বসত ভিটা সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্র্। অনেকেই আবার সহায় সম্বল হারিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন পরের জমিতে।
শুধু ফসলি জমি ও ঘরবাড়িই নয়, হুমকির মুখে রয়েছে ওই গ্রামের চলাচলের এক মাত্র বেঁড়িবাধ সড়কও। এর বিভিন্নস্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। যে কোন মুহূর্তে এ সড়ক নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কয়েকটি গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ক্ষতিগ্রস্ত কনক লতা মন্ডল ও আশা লতা বেপারি বলেন, ‘প্রতিদিন নারায়ণখালী গ্রামের মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। কোনভাবে দিন রাত পার করছি। চিন্তায় থাকি কখন শেষ সম্বল জমিটুকু নদী গর্ভে চলে যায়।’
ক্ষতিগ্রস্ত তপন বসু ও ননী গোপাল বলেন, ‘নদী ভাঙ্গন রোধে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় মেম্বর ও চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু, তাতে আমাদের কোন লাভ হয়নি।’ তারা দ্রুত নদী ভাঙ্গন ও চলাচলের একমাত্র বেঁড়িবাধ সড়ক রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, ‘নদী ভাঙ্গনের কথা মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’