জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: তীব্র শীতে গোপালগঞ্জ জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমেল হাওয়ার পাশাপাশি সূর্যের দেখা না মেলায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়, জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান।
এদিন ভোর থেকে তীব্র কুয়াশার সঙ্গে জেলার ওপর দিয়ে বইছে কনকনে হাওয়া। এতে শীতের তীব্রতা দ্বিগুণ অনুভূত হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে গরম কাপড়ের অভাবে বেশি কষ্টে পড়েছেন ছিন্নমূল, গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষ। কাজে বের হতে পারছেন না তারা। জীবীকার প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন তারা টুপি, মাফলার ও চাঁদর মুড়ি দিয়ে বের হচ্ছেন।
ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে।
রাস্তার নির্মাণ কাজ করা দিনমজুর রাজু (২৫) বলেন, শীতে কাজ করতে খুব কষ্ট পাচ্ছি। শীতের সঙ্গে বাতাসে আরো কাহিল হয়ে পড়ছি।
ভোরে কাজে আসার সময় কুয়াশা ও বাতাস ছিল, প্রচণ্ড ঠান্ডা লেগেছে। এমন আবহাওয়া থাকলে কাজে বের হওয়া খুবই কষ্টের। তবুও বের হতে হয়েছে।
শহরের এক ভবনের কাজে ব্যস্ত মো. মাসুদ বলেন, বুধবার এত শীত ছিল না। একদিনের ব্যবধানে হঠাৎ করে এত শীত পড়ায় সহ্য করতে পারছি না। শীতে হাত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো অবস্থা। বাতাসে শীত বেশি লাগছে। আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে, তারপরও পেটের দায়ে কাজে এসেছি,” বলেন এই নির্মাণশ্রমিক।
এদিকে অনেকেই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ভিড় করছেন হাসপাতালগুলোতে। এরমধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। অন্যদিকে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন। পুরানো কাপড়ের দোকানে ছুটছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
গোপালগঞ্জ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, সকাল ৬টায় দেশের সবনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে। সেসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মূলত ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ না দেখা যাওয়া এবং উত্তরের মৃদু হিমেল হওয়ার কারণে এই শীতের অনুভূতিকে বাড়িয়ে তুলছে।
আগামী তিন দিনে এই তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে, তখন জেলায় শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।