,

নদীভাঙনে দিশেহারা গ্রামবাসী

জেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-বিনদপুর রাস্তার গোবিন্দনগর-ভটেরগাঁওয়ের মূল অংশ নদীভাঙনে বিলীন হওয়ায় এই অঞ্চলের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছেন। ভাঙনে সড়ক ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়লে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়বেন বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, গোবিন্দনগর-ভটেরগাঁও সড়কের বিলপাড় রাস্তার ২ কিলোমিটার মেরামতের কাজ শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মেরামত কাজে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। কাজের মেয়াদ এক দফা শেষ হওয়ার পর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

স্থানীয়রা বলছেন, সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা হলে এবং সড়ক রক্ষায় পদক্ষেপ নিলে এতটা ক্ষতি হতো না। সে ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে হলেও লোকালয় ও মানুষের ফসলি জমি রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, সাম্প্রতিক বন্যা ও বরাদ্দের অপ্রতুলতার কারণেই বিলম্বিত হয়েছে সড়কের কাজ।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপির সিঙ্গুয়া থেকে গোবিন্দনগর ফজলিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রায় অর্ধেক কিলোমিটার পাকা রাস্তা ভেঙে পড়েছে। এতে গোবিন্দগঞ্জ ও বিনদপুর দশঘর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সড়কের একটি বিশাল অংশ ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় সেটিও ভেঙে পড়বে।

ভাঙনের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন ভটেরগাঁও, কৃষ্ণনগর, হরিনগর, শ্যামনগর, গোবিন্দনগর, নাখরাকা, মালিকান্দি, দশঘর, লক্ষ্মীপুর, বিনদপুর, বড়চাল, ভুগলি, বানারশি, বাগইন, উত্তরপাড়া, ছৈলাসহ অর্ধশত গ্রামের মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে বিকল্প রাস্তা হিসেবে এলাকার লোকজন গোবিন্দনগর বিলপাড় গ্রামের ভাঙা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। সম্প্রতি ভাঙনের কারণে বিনদপুরের ভাঙা রাস্তার পাশের শুকনো জমির ওপর দিয়ে চলাচলে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা।

গোবিন্দনগর গ্রামের আবদুল খালিক, দশঘর বিনদপুর গ্রামের রেজ্জাদ আহমদসহ স্থানীয়রা জানান, যে পথে হালকা যানবাহন চলাচল ছিল, সেই পথে এখন হেঁটে চলারও উপায় নেই। নির্ধারিত সময়ে সড়কের মেরামত কাজ শেষ করা হলে এতটা দুর্ভোগে পড়তে হতো না।

স্থানীয়রা আরও জানান, এ পাকা সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে নদীভাঙনের তাণ্ডব। এখানে এলজিইডির অধীনে ঠিকাদার
কাজ শুরু করলেও চলছে ধীরগতিতে। সড়কটি রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেই।

রাস্তার কাজের দায়িত্বে থাকা মেসার্স বেলাল এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মুর্শেদ আলম বেলাল জানান, নানা জটিলতায় কাজ শুরু করতে
বিলম্ব হয়েছে। বর্তমানে মেরামত কাজের প্রায় ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী আফছর আহমেদ জানান, গত বন্যায় শত শত রাস্তা ও কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। রাস্তার নিচ থেকে মাঠি সরে গেছে। বিনদপুরের রাস্তাটির বেলায়ও একই পরিস্থিতি। এরই মধ্যে রাস্তার পাশে গাইড ওয়ালসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই এর কাজ শেষ করে নদীভাঙনের সাময়িক সমাধান নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি এই সমস্যা সমাধানে স্থায়ী পদক্ষেপ নিশ্চিতে কি করা যায় সে ব্যাপারেও ভাবা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর