,

‘আমরা এহ্যানের ভোটার না, তাই কেউ সাহায্য দ্যায় না’

কাশিয়ানী প্রতিনিধি: ‘আমরা এহ্যানের ভোটার না, তাই কেউ আমাগে সাহায্য দ্যায় না। চেয়ারম্যান-মেম্বর ও অনেক নিত্যাগে কাছে গ্যাছি কেউ এটটু সাহায্য করেনাই। সবাই বলে তুমরা এহ্যানের ভোটার না, যেহ্যানের ভোটার সেহ্যানে যাও।’

এভাবে কথাগুলো বলছিলেন গত এক মাস ধরে কর্মহীন হয়ে পড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজারের সিঙ্গারা বিক্রেতা নশু শেখ (৪৫)। তিনি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ওই বাজারের ভূমি অফিসের পাশে ফুটপাতে বসে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে করেন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রামের বাসিন্দা নশু শেখ (৪৫)। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে রামদিয়া বাজারে ভূমি অফিসের পাশে ফুটপাতে বসে সামান্য একটু সিঙ্গারা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকারি নির্দেশে গত মাসের ২৩ তারিখ থেকে ব্যবসা বন্ধ করে ঘরে থাকছেন তিনি। পরিবারের ৭ সদস্য নিয়ে কর্মহীন হয়ে সরকারি সহায়তা অভাবে নিদারুন দুঃখ কষ্টের মধ্যে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু সাহায্যের জন্য তিনি এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, রাজনৈতিক নেতা ও বিত্তশালীদের দুয়ারে দূয়ারে ধর্না দিয়েও সামান্যটুকু সাহায্য মেলেনি। তিনি ওই এলাকার ভোটার না বলে সকলে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ হতভাগ্য পরিবারটির কপালে জুটেনি একদানা চালও।

নশুর স্ত্রী আফরোজা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এতদিন হলো স্বামী বেকার অবস্থায় ঘরে বসা, কাজ-কাম নাই। দুই মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি। সরকার থেকে কত চাল-ডাল, তেল দিচ্ছে আমাদের কপালে একটা দানাও জুটল না। ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলেছেন তোমরা তো এখানের ভোটার না। যেখানের ভোটার সেখানে যাও।’

বেথুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিরোদ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘আমার কাছে এ রকম কেউ এখন পর্যন্ত আসেনি। তবে ওই পরিবার প্রধানের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়ে গেলে আমি তাদের খাদ্য সহায়তা দেব।’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘এ রকম কেউ ভোটার না হলেও আমরা তাকে সাহায্য করবো। যেমন অস্থায়ী বেদেদেরকে আমরা সরকারি খাদ্য সহায়তা দিয়েছি।’

এই বিভাগের আরও খবর