,

রাজার সাজে হাতি নিয়ে বিয়ে করলেন বর!

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে গেছেন রাজা-বাদশারা। সেই রাজপ্রথা আর রাজকীয়তা এখন দূর অতীত। তবে কিছু এলাকায় শখের বশে হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার খবর শুনা যায়।

এবার এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর সীমান্তবর্তী উপজেলা ধামইরহাট উপজেলায়। নানার এবং নিজের ইচ্ছা পূরণে হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে যান বর।

শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয় এই আলোচিত বিয়ে। ঘটনাটি পুরো জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছে। কারণ বর্তমান সময়ে এই অঞ্চলে এমন ঘটনার কথা শুনেননি স্থানীয়রা।

বরের নাম মো. রাছেল মাহমুদ (২৮)। তিনি উপজেলা সদরের উত্তর চকযদু মহল্লার সাবেক ইউপি সদস্য মো.আনোয়ার হোসেনের ছেলে। রাছেল মানবসেবা নামে একটি সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

কনের নাম মোসা. সাদিয়া তাসনিম হিমু (২০)। সে উপজেলার উমার ইউনিয়নের বেলঘরিয়া গ্রামের মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে। বর-কনে দুই পরিবার’ই সম্ভ্রান্ত।

জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে মাউতকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা সদর থেকে হাতির পিঠে চড়ে বেলঘরিয়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বর রাসেল। মাঝে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরত্ব। এসময় রাস্তার দুই পার্শে হাতি ও বরকে দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভীড় জমায়। পুরাতন দিনের রেওয়াজ অনুসারে হাতি নিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার এ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে হাতির পিঠে চড়ে বর আসায় কনের এলাকাতেও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। হাতির পিঠে চড়ে বর ও বরযাত্রীদের গাড়িবহরের সঙ্গে দুপুর নাগাদ বেলঘড়িয়া গ্রামে কনের বাড়িতে পৌঁছায়। এসময় কনের বাড়িতে নিজ গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের উৎসুক শিশু, নারী ও লোকজন ভিড় জমান।

পরিবারের লোকজনরা জানান, রাসেলের নানা হাতিতে চড়ে গিয়ে বিবাহ করেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল নাতিকেও হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে দিবেন। মৃত নানার সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই এই আয়োজন। বিয়ের দিন সকালেই বরের বাড়িতে চলে আসে ভাড়া করা সেই হাতি। তারপর চলে হাতিকে গোসল করানো ও আকর্ষণীয় করে সাজানোর কাজ। এরপর কনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় বর। আত্নীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের দাওয়াত করে হচ্ছে অনুষ্ঠান। চলছে হৈ হুল্লোড় ও ভূরিভোজ। এমন ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনে খুশি বর-কনের স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, বর্তমান সময়ে এ অঞ্চলে হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করার ঘটনা শুনেননি তারা। তাই এমন ঘটনা আনন্দ ও উপভোগের।

বরের বাবা মো. আনোয়ার হোসেনের বলেন, রাসেল তার নানার খুব প্রিয় নাতি। রাসেল যখন ছোট ছিল তাঁর নানার হাতিতে চড়ে বিয়ের গল্প শুনান। এবং রাছেলকেও হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করানোর কথা বলেন। সেই ইচ্ছা পূরণ করতে এই আয়োজন। প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকায় হাতি ভাড়া করে আনা হয়।

কনে সাদিয়া খাতুন হিমু বলেন, ‘আমার বিয়েতে হাতিতে চড়ে বর এসেছে, এটি আমার জীবনের অন্যরকম অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

বর রাছেল মাহমুদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার নানা আমাকে হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার কথা বলে বলেছিলেন। এরপর থেকে আমিও স্বপ্ন দেখি হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে দেখার। সেই ইচ্ছে পূরণের জন্য আজ হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে তাই। ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে আমি খুব খুশি।

এই বিভাগের আরও খবর