,

রংপুরে গৃহবধূকে গাছে বেঁধে দিনভর নির্যাতন-চুল কর্তন

নির্যাতন করে চুল কেটে দিয়েছে নির্যাতনকারীরা

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক গৃহবধূকে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করে চুল কেটে দিয়েছে নির্যাতনকারীরা।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার রংপরের গঙ্গাচড়া থানার বেতগাড়ী পুটিমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিতা গৃহবধূর নাম মানিকা বেগম (৩৫)। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর জামাতা মোকলেছ মিয়া বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৪০ দিন আগে মানিকা বেগমের দেবর আবদুল মতিনের (৪০) মেয়ে মৌসুমি বেগমের (২৪) বিয়ে হয় রংপুর সদর থানার পাগলাপীর এলাকায় লিটন মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের পর তার স্বামী বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারে মৌসুমির সঙ্গে অনেকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এই অপবাদে মৌসুমি বেগমকে ২১ জুলাই তার স্বামী লিটন মিয়া তালাক দেয়।

এ ঘটনায় আবদুল মতিন ও তার মেয়েসহ সবাই মনে করে, এই তালাকের নেপথ্যে মানিকা বেগম দায়ী। সে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার মেয়েকে তালাক দেয়ার ইন্ধন যুগীয়েছে। মেয়ের এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে তাদের দুই পরিবারের মাঝে ঝগড়া বিবাদ চলছিল।

সর্বশেষ বুধবার বিকাল বেলা মানিকার দেবর আবদুল মতিন, তার মেয়ে, স্ত্রী, অপর দেবর আবদুল মোত্তালেবসহ (৪৩) পরিবারের লোকজন মিলে মানিকা বেগমকে বেধড়ক মারধোর করে। একপর্যায়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে দিনভর নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়া হয়।

বিকালে এই খবর বিকালবেলা জানতে পেরে মানিকা বেগমকে নির্যাতনকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গির আলম । পরে বাড়িতে রেখে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেন মানিকার স্বামী ও অন্যরা।

তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই নির্যাতনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার নির্যাতিতা গৃহবধূর জামাতা মোকলেছ মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় দুপুর বেলা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ মামলা দায়ের করার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ঘটনার সত্যতা পান। পরে মামলার ৬ আসামির মধ্যে ২ আসামি আবদুল মোত্তালেব ও আবদুল মতিনকে গ্রেফতার করে। অপর আসামিরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশান্ত কুমার সরকার জানান, ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গেতগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপটন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনা সম্পর্কে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পরস্পর ভাই-দেবর-ভাবি-ভাতিজি সম্পর্কের। তাই এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। থানায় মামলা হয়েছে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

এই বিভাগের আরও খবর