জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বহুগ্রাম প্রতাপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগবাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও আদালতের ভুয়া কাগজপত্র তৈরিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এসব বিষয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এবং গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডা. অধীর কুমার দাস।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন বিশ্বাস বিদ্যালয়টিতে যোগদান করার পর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তিনি বিদ্যালয়ের জমি লীজ, শিক্ষার্থীদের সেশন ফি ও ভর্তিসহ বিভিন্ন খাতের আয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে ইচ্ছামতো ব্যয় করেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায়ে কোনো প্রকার রশিদ দেন না। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় গোপন করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন বিশ্বাস।
এছাড়া বিদ্যালয়ের পুকুরের বালু বিক্রির টাকা প্রধান শিক্ষক ও তার ভগ্নিপতি ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা পরিতোষ সরকার যোগসাজস করে আত্মসাৎ করেছেন। পরিতোষ সরকার তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। বিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগে প্রধান শিক্ষক ও তার ভগ্নিপতি ছয়জন প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। ওই প্রার্থীরা নিয়োগ পাবে না বুঝতে পেরে প্রধান শিক্ষক তার আত্মীয়কে দিয়ে নানা রকম মামলা-মোকাদ্দমা করিয়ে নিয়োগ বন্ধের পাঁয়তারা করেন।
এমনকি উচ্চ আদালতের ভুয়া ‘নিষেধাজ্ঞার’ কাগজও তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক ও তার ভগ্নিপতির স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়টি আজ ধ্বংসের পথে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘স্কুলের ছয়টি শূন্য ও সৃষ্টপদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’