,

মামাকে আটকে ভাগ্নেকে আল্টিমেটাম সেই তরুণীর

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা: বিয়ের দাবিতে জামালপুর থেকে বরগুনায় আসা সেই তরুণী এবার আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার সংলগ্ন প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

রোববার দুপুরে মাহমুদুলের মামা আবদুস সোবাহান গাজী ওই বাসায় খোঁজ-খবর নিতে এলে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন সেই তরুণী এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাহমুদুলকে হাজির করার আল্টিমেটাম দেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লা জানান, বৃহষ্পতিবার বিকেলে তরুণীর আসার খবর পেয়ে বাসা ছেড়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে আছেন মাহমুদুল হাসান।

তরুণী জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়িতে তার গ্রামের বাড়ি। ঢাকার উত্তরায় থাকেন এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তার প্রেমিক মাহমুদুল উত্তরায় থেকে পড়াশোনা করতেন। সেখানেই দুজনের পরিচয় থেকে প্রেম।

প্রেমিকার অভিযোগ, তিন বছর প্রেমের পর সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে নানা অযুহাতে তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি বরগুনায় চলে আসেন।

বাড়িতে এসে তরুণীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহষ্পতিবার সকালে বরগুনায় গিয়ে হাজির হন তরুণী এবং চান্দখালি বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসার সামনে অবস্থান নেন। কিন্ত তিনি আসার পরপরই মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসায় তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয়।

রোববার দুপুরে ওই তরুণী জানান, প্রেমিক মাহমুদুলের বাসা তালাবদ্ধ থাকায় তিনি বাসার সামনে বসে দিন-রাত পার করছেন। কিন্ত গত তিনদিনেও মাহমুদুল বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ে তার দাবি মেনে না নেয়া হলে বাসার সামনেই আত্মহত্যা করবেন।

তরুণী বলেন, ‘আমি এখানে মানবেতর দিনযাপন করছি এবং মাহমুদুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। ওর ফ্যামিলি যদি সাড়া না দেয় তবে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। কারণ, আমার ফেরার কোনো পথ খোলা নেই।’

এ সময় তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর কাছেও সহযোগিতা চান।

এদিকে, ওই তরুণীকে নিরাপত্তা দিয়ে দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ সোনা মোল্লা। তিনি বলেন, ‘আমরা তিনদিন ধরে মাহমুদুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। মেয়েটিকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছি। আসলে এর সমাধান দরকার এবং আমরা সেই চেষ্টা করছি।’

মাহমুদুলের বাসার সামনে অবরুদ্ধ অবস্থায় তার মামা আবদুস সোবাহান গাজি বলেন, ‘আমি মানবিক কারণে মেয়েটির খোঁজ নিতে এসেছিলাম। আমার ভাগ্নে বা বোন ভগ্নিপতির সাথে আমিও যোগাযোগ করতে পারছি না। আমি চাই এটার সমাধান হোক।’

এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসানের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বেতাগী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেছেন, ‘মেয়েটি যদি লিখিত অভিযোগ করে তবে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এর আগে বেতাগীর ইউএনও সুহৃদ সালেহিন বলেছিলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। ওই তরুণীর নিরাপত্তা ও আইনগত সহায়তার জন্য আমি বেতাগী থানার ওসিকে বলেছি। বিষয়টি সমাধানে উভয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা চেষ্টা করছি।’

এই বিভাগের আরও খবর