পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরে মাইকিং করে ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে ক্রেতাদেরও প্রচুর ভিড় লক্ষ করা যায়। মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল এমন পরিস্থিতি।
এদিকে ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ফলে শেষ দিনের মতো বাজারে ইলিশ বেচাকেনায় ধুম পড়ে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
কলাপাড়া পৌর শহরের মাছ বাজার, সদর রোড, কৃষি ব্যাংকের মোড়ে রাস্তার ওপর বসে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। ইলিশের আমদানি বেশি হওয়ায় রাস্তার ওপর বসেছে হাঁট। ইলিশ কেনায় যেন স্থানীয়দের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কলাপাড়া পৌর শহরের পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা গৌতম হালদার বলেন, ‘বাসার সবাই ইলিশ পছন্দ করে। এত দিন দাম বেশি ছিল। তাই কোনো মাছ কিনি নাই। ৪০০ টাকা কেজি দরে ৭০০-৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনলাম।’
কলাপাড়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, কলাপাড়া পৌর শহরে ৪৫০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি প্রতি ৪০০ টাকা, ৭৫০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০ টাকা, ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০-৭০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৮০০-৮৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
কলাপাড়া পৌর শহরের কৃষি ব্যাংকের মোড়ে এক কেজি বা তার একটু বেশি ওজনের ইলিশ ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। মাছ বিক্রেতা মো. শহিদুল ইসলামের কাছে দাম বেশির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘এসব রাবনাবাদ নদের মাছ। এ মাছের স্বাদ বেশি, যার কারণে দামও বেশি।’
কলাপাড়া পৌর শহরের তুলনায় মহিপুর, আলীপুর, কুয়াকাটা মোকামে তুলনামূলক কম দামে মাছ বিক্রি হয়েছে। মহিপুর বন্দরের মো. জামাল হোসেন নামের একজন জানান, এক কেজি ওজনের নিচে ইলিশ গড়ে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মহিপুর মৎস্য আড়তদার ও সমবায় সমিতির সভাপতি মো. ফজলু গাজী বলেন, ‘মাছ নিয়ে প্রচুর ট্রলার মহিপুর-আলীপুর ঘাটে নোঙর করেছে। মাছের আমদানি এত বেশি কেনার লোক কম। ফলে বিপুল পরিমাণ মাছ অবিক্রীতই থেকে যাবে।’
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, গত এক দশক ধরে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম সুচারুরূপে বাস্তবায়নের ফসল এবং বঙ্গোপসাগরে যাবতীয় মৎস্য সম্পদ আহরণে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশের এত বেশি উৎপাদন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, সাগরবক্ষ থেকে আলীপুর-মহিপুরে প্রচুর ইলিশ মাছ এসেছে। রাত ১২টার পর আর বেচাকেনা করা যাবে না। যেসব মাছ অবিক্রীত থাকবে, তা স্থানীয় বরফ কলগুলোতে প্রশাসনের উপস্থিতিতে গুদামজাত করে সিল করে রাখা হবে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর এসব মাছ বাজারে বিক্রি করা যাবে।