নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থা স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছে। জনগণ এখন যাকে খুশি তাকেই ভোট দিতে পারে। আর সেজন্যই বিএনপি ভোটে আসেনি। কেননা তারা ভোট চুরি করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে পাঁচ জেলার নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতীতে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করা হয়েছিল। জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে- এই প্রত্যয় নিয়েই সংগ্রাম করেছি। অনেক সংগ্রাম, ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের পার হতে হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীকে অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে। তারপরও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসি। জনগণের সেবক হিসেবে যাত্রা শুরু করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল ছিল পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বর্ণযুগ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্যসেবা নিশ্চিত করি, চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেই। শিক্ষার ব্যবস্থা করি, বিনামূল্যে বই দেয়ার ব্যবস্থা করি। আমরা এ দেশের রাস্তাঘাট- ব্রিজ নির্মাণের কাজ হাতে নেই। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে ১৬০০ থেকে ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দেব সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করি।
‘কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। কারণ একটা বড় দেশ থেকে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব ছিল। আমি বলেছিলাম- এটা জনগণের সম্পদ, আমি বিক্রি করতে পারি না। কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে যান।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, বিএনপি কত মানুষকে হত্যা করেছে তার কোনো হিসাব নেই। আমাদের মা-বোনদের ওপর পাকিস্তানিরা যেভাবে নির্যাতন করেছে, সেভাবেই তারা নির্যাতন করেছে। সে সময় ফাহিমা, মহিমা, রুমা আত্মহত্যা করে নিজেদের ইজ্জত বাঁচান।
‘এরকম একটা তাণ্ডব শুধু নয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন বাংলাদেশ ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। পাঁচ বার দুর্নীতিতে তারা বিশ্বে এক নম্বর হয়েছিল। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, বাংলা ভাই, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, আমাদের কত নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে তার হিসাব নেই। আমরা বার বার তাদের আক্রমণের শিকার হয়েছি। তারপরও আমরা দমে যাইনি। বরং এগিয়ে গেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই, এত বাধা-বিপত্তি ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে আপনারা সংগঠনকে ধরে রেখেছেন এবং এগিয়ে যাচ্ছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগ জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আর সেটা অব্যাহত থাকবে। এবারের নির্বাচনে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ করে কেউ যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
‘নির্বাচনে ভোট নিয়ে যেন কোনো সংঘাত না হয়। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। দলের নেতাকর্মী যেই হোক এর কোনো ব্যত্যয় হলে ছাড় দেয়া হবে না। কেউ কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। এখানে কোনোরকম মারামারি-সংঘাত দেখতে চাই না।’