,

‘ভুয়া চিকিৎসায়’ মৃত্যু, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করার কোনো ব্যবস্থা নেই, তবুও সঠিকভাবে এনজিওগ্রাম করে হার্টে রিং পরানোর আশ্বাস দেন চিকিৎসক। অপারেশন থিয়েটারে অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীকে তাৎক্ষণিক ঢাকায় নিতে বলেন সেই চিকিৎসক। স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে না করতেই মৃত্যু হয় রোগীর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১৬ মে ইয়াছমিন আক্তার নামে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ওই ক্লিনিকের কনসালটেন্ট ডা. মাসুমা কাওছারের বিরুদ্ধে ভুয়া চিকিৎসার অভিযোগ এনে আদালতে হত্যা মামলা করেছেন ওই নারীর স্বামী।

৫০ বছর বয়সী ইয়াছমিন আক্তার শহরের দক্ষিণ পৈরতলার বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ার আহমেদ খানের স্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।

বখতিয়ার আহমেদ খান গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৫ মে সকাল সোয়া ১১টার দিকে হার্টের সমস্যার কারণে ইয়াছমিন আক্তারকে পৌর শহরের কুমারশীল মোড়ের নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে নিয়ে যান তার ছেলে সাজ্জাত আহমেদ। সেখানে চিকিৎসক মাসুমা কাওছারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়। রোগী দেখে তিনি কিছু পরীক্ষা করান। রিপোর্ট পেয়ে রোগীকে এনজিওগ্রাম করাতে বলেন ডা. মাসুমা। সাজ্জাত তার মাকে ঢাকায় রেফার করতে বললে ডা. মাসুমা ওই ক্লিনিকেই সঠিকভাবে এনজিওগ্রাম করে হার্টে রিং পরানোর আশ্বাস দেন।

নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারের ওটিতেই এনজিওগ্রাম করার ব্যবস্থা করা হয়। এনজিওগ্রাম করার এক পর্যায়ে সাজ্জাতকে ডা. মাসুমা জানান, রোগীর অবস্থা খারাপ, সেখানে আর চিকিৎসা চালানো সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে দ্রুত ঢাকায় নিতে হবে জানিয়ে ১৬ মে ইয়াছমিনকে ডিসচার্জ করা হয়।

মামলায় আরও বলা হয়, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার পর ১৬ মে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে ইয়াছমিন আক্তার মারা গেছেন। এই মৃত্যু সন্দেহজনক মনে হলে ঢাকায় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টার থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিউ ল্যাব এইড কার্ডিয়াক সেন্টারে এনজিওগ্রাম করার কোনো ব্যবস্থাই নেই।

গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসক মাসুমা কাওছারের বিরুদ্ধে ভুয়া চিকিৎসা করে ইয়াছমিন আক্তারকে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়।

চিকিৎসক মাছুমা কাওছার বলেন, ‘আমার ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাননি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মারা গেলেই পরিবার-পরিজন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে যায়।’

‘আমার এনজিওগ্রাম করার অনুমতি আছে। এ বিষয়ে আমি এমডি করেছি। মামলা করার অধিকার সবাই রাখে। এ ব্যাপারে এখন কোর্ট ব্যবস্থা নেবে।’

এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, ‘যেহেতু মামলা হয়েছে, এখন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর