2. চট্টগ্রাম, দেশজুড়ে
3. ভিডিও কলে নববধূর, পরে প্রবাসী প্রেমিকের আত্মহত্যা

ভিডিও কলে নববধূর, পরে প্রবাসী প্রেমিকের আত্মহত্যা

1. নিউজ ডেস্ক


2. প্রকাশের সময় October, 28, 2024, 7:54 pm

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা: ওমানপ্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার এক নববধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাহিনীটির ভাষ্য, পরবর্তী সময়ে প্রবাসী প্রেমিকও আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের ভাষ্য, লালমাই উপজেলার বেতুয়া এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আত্মহত্যা করেন খাদিজা আক্তার ঊর্মি (১৬)। রোববার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।

ঊর্মির বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামে। তিনি চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

প্রেমিক ওমান প্রবাসী সাফায়েত হোসেনের বাড়ি একই উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে।

ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ ও মরদেহের পাশে থাকা চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ অক্টোবর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় ঊর্মির। বিয়ের ১৩ দিনের মাথায় প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। পরে তার ওমানপ্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেনও আত্মহত্যা করেন। দুজনের কাছ থেকেই চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিঠিতে একসঙ্গে দাফনের আকুতি জানিয়েছেন নববধূ।

ঊর্মির মরদেহের পাশে চিরকুটে লেখা হয়, ‌‌চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি যে, ও আমার প্রথম সাথি। ওরে আমি বিয়ে করছি, কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউকে দিতে পারি নাই, পারবও না।
তোমরা সুখে থেকো। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না।

চিরকুটে আরও লেখা ছিল, ‘ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে।

‘বাবা-মা ও ভাই-বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু একসঙ্গে থাকতে দেও নাই, আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। এক দিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পূরণ করেন আপনারা।’

অপরদিকে প্রেমিক ওমান প্রবাসী সাফায়াতের মরদেহের পাশেও একটি চিরকুট উদ্ধার করেন স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পরে সেটির ছবি তুলে সাফায়াতের পরিবারকে পাঠানো হয়।

তিনি মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখেন, ‘শেষ ইচ্ছা পূরণ করার দায়িত্ব আপনাদের। আমার মৃত্যুর কারণ একমাত্র ওর ফ্যামিলি। আমার মোবাইলে সব রেকর্ড করা আছে। সবকিছু ভিডিও করা আছে।

‘আমার মৃত্যুর জন্য কে কে দায়ী, সবকিছু আমার মোবাইলে রেকর্ড করা আছে আর ভিডিও করা আছে। আমার মোবাইল তার প্রমাণ।

‘আমার মোবাইল চেক করলে সব পাবেন। রেকর্ড অপশনে আর গ্যালারিতে সব আছে। আমার আটটা ভিডিও আছে। সবগুলো দেখবেন। লক খুলে রেকর্ড অপশনে ঢুকবেন, ইমোতে দুইটা আর বাকিগুলো গ্যালারিতে পাবেন। তার দেয়া চিঠি আছে আরিফ নামের আইডিতে। আমাদের মৃত্যুর কারণ তারা। কোনোদিন ক্ষমা করব না।’

ঊর্মির মা নুরুন্নাহার বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাফায়াত নামের এক প্রবাসী ছেলের সম্পর্ক ছিল। গত ১৪ অক্টোবর সম্মতি নিয়েই মেয়েকে বিয়ে দিই। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল।

‘শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি ঊর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়াত ভিডিও কলে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। প্রবাসী ছেলেটাই আমার মেয়ের মাথা খারাপ করে দিয়েছে।’

সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, ‘এক বছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক মেসেঞ্জারে আমার ছেলের সঙ্গে ঊর্মি নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল।

‘হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।’

বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেসহ দুটি জীবনের আলো নিভে গেছে। তিনটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য মেয়ের বাল্যবিয়ে দায়ী।’

আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করবেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের চিরকুট হাতে পেয়েছি। তা ছাড়া মৃত্যুর আগে আমার ছেলের থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মেয়ের মা।’

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘বিয়ের ১৩তম দিনে নববধূ প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি, প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছে।

‘শনিবার রাত আনুমানিক ১১টায় নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশে এটি লিখেছিল। এই ঘটনায় নববধূর ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

•   বিভাগীয় কমিশনারের সাথে কাশিয়ানীর কর্মকর্তাদের মতবিনিময়
•   চুরির অভিযোগে একজনকে ‘পিটিয়ে হত্যা’
•   এক সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ১২ জন!
•   টেকনাফে যুগান্তরের সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা
•   বাসায় ডেকে নিয়ে ‘ধর্ষণের অভিযোগ’ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে
•   ৫ মাস বেতন বন্ধ: ‘অর্থকষ্টে’ কাশিয়ানীর ৩৭ স্বাস্থ্যকর্মী
•   মাদারীপুরে দীপ্ত টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
•   ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে নিয়োগ, বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
•   রাতের আধাঁরে ‘সরকারি জমিতে ঘর’, গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
•   কালাইয়ে ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন