,

ভারী বর্ষণে উত্তাল মেঘনা, ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ

জেলা প্রতিনিধি, ভোলা: হঠাৎ করে নিম্নচাপ আর ভারী বর্ষণে উত্তাল মেঘনাকে উপেক্ষা করে বেশিরভাগ জেলেরা ছুটেছেন রূপালি ইলিশের টানে। ভারী বর্ষণের প্রভাবে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মনপুরার জেলেদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন ইলিশের দেখা না মিললেও নিম্নচাপের শুরতেই জালে ধরা দিতে শুরু করেছে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। সরগম হয়ে উঠেছে মাছের আড়তগুলো। গত গত এক সপ্তাহে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে মেঘনায়। এতে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জেলের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।

বর্ষার শুরু থেকে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও মনপুরা মেঘনা নদীতে ইলিশ শিকারী জেলেদের জীবন কাটছিলো ধার-দেনা করে। এদিকে জেলেরা দাদনের বোঝা ও সংসারের ঘানিতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছিল। এখন নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ পাওয়ায় তারা আনন্দে আত্মহারা। বাজারে ইলিশের দাম ভালো থাকায় উপজেলার জেলে ও ব্যবসায়ী আড়ৎদারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। আর বাজারে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসতে দেখা গেছে।

মনপুরা মৎস্য অফিস সূত্রে জানায়, উপজেলা নিবন্ধিত জেলে আছে ১০ হাজার ৫ শত। কিন্তু অন্যান্য এনজিও তথ্য মতে, উপজেলায় প্রায় ৮০ হাজার জেলে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। মাছ ধরা ও বিক্রি করাই তাদের একমাত্র উপার্জনের পথ। জেলেদের ভাষ্যমতে জানাজায়, নিবন্ধিত জেলে ছাড়া অন্য জেলেরা কোনো সরকারি সহযোগিতা পায় না। তবে সরকারের জাটকা ধরা নিষেধের সময় তারা নদীতে মাছের জন্য কেউ নামেনি।

উপজেলা জেলে তালতলা ঘাটের বসির মাঝি, মাঝেরঘাটের গিয়াসউদ্দিন মাঝি, জনতা বাজার জাহাঙ্গীর মাঝি, ঝংলার খাল এর ইসমাইল মাঝি, রামনেওয়াজ ঘাটের হাসান মাঝিসহ অনেকে সময়ের আলোকে বলেন, বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলিশ বাড়ছে নদীতে। কিছুটা হলেও এখন স্বস্তি ফিরে এসেছে আমাদের মাঝে।

এইদিকে জেলেদের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, একটি বড় বোট নিয়ে নদীতে গেলে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে। খরচ বাদ দিলে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো থাকছে বোট প্রতি। আর ছোট নৌকায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো থাকছে। এতে করে জেলেদের দেনার দায় কমে আসছে বলে জানান তারা।

দক্ষিণ সাকুচিয়া মাঝেরঘাটের আড়ৎদার সাত্তার ব্যাপারী জানান, গত ৭ দিন ধরে ইলিশ মাছের আমদানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন নৌকা-ট্রলারে করে ঘাটে ইলিশ মাছ আসছে। তবে দাম একটু বাড়তি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত না হওয়াকে তিনি মাছ না পাওয়ার কারণ হিসাবে জানান।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে মনপুরা মেঘনার বিভিন্ন মাছের আড়তে গিয়ে দেখা যায় পর্যাপ্ত ইলিশ রয়েছে। তবে তা আকারে অনেক ছোট। বিশিষ্টজনদের মতে এই ভাবে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ শিকার চলতে থাকলে এক সময় মেঘনা ইলিশ শূন্য হয়ে পরবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন জানান, বৃষ্টির উপর নির্ভর করছে ইলিশের গতিপথ। যেহেতু বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ইলিশের আমদানিও বাড়ছে। আমরা বিভিন্ন স্থানে খবর পেয়েছি, তাতে ইলিশ পড়া শুরু হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর