,

বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

বিডিনিউজ ১০ ডটকম: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে লাখো জনতা। সূর্যোদয়ের পর থেকেই মানুষের ঢল নামে স্মৃতিসৌধে।

সমাজের সর্বক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধীদের বর্জনের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সবাই। সেই সঙ্গে বিনম্র শ্রদ্ধাবনত চিত্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করল পুরো জাতি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিজয় উল্লাসে মেতে উঠে।

বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীতে যেন বাঙালি জাতির মনে যুদ্ধাপরাধীদের সামাজিকভাবে বয়কটের দাবি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।

আজ ১৬ ডিসেম্বর দিবসের প্রথম প্রহর থেকেই বাঙালি জাতির অহংকার বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে আসেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনৈতিক, বিদেশি অতিথি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

বিজয় দিবসের শুরুতেই ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে ভিড় করতে থাকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা ও বয়সের মানুষ। এ সময় তাদের হাতে ফুল, পতাকা, আর বিজয়োল্লাসের বিভিন্ন ধরনের লেখা সংবলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানকিতায় ভোর সাড়ে ৬টা ৩৪ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পনের পর কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুন সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব আনার প্রদান করেন সেনবাহিনীর একটি চৌকস দল। এর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে আবারও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। এর পরপরই খুলে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটক। এ সময় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

ফুলেল শ্রদ্ধায় বিজয়ের উচ্ছাসে উচ্ছসিত সূর্যের মতোই আলোকিত করে জাতির সূর্য সন্তানদের। একে একে শ্রদ্ধা জানান কূটনৈতিকবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ, জাকের পার্টি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন দুগ্ধ খামার, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর বিভিন্ন হল সমূহ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলসমূহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সিআরপি, পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাংবাদিক ফোরাম, ন্যাপ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সাম্যবাদী দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসময় জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।

স্মৃতিসৌধ এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের পুরো এলাকা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহস্রাধিক সদস্যের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের বলয় তৈরি করা হয় পুরো এলাকায়। পুরো এলাকাকে অর্ধশত সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়। তল্লাশি চৌকী ছাড়াও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বাড়ানো হয় নজরদারী। শান্তিপূর্ণভাবেই স্মৃতিসৌধে অভ্যাগতরা তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদ বেদিতে।
খবর

-বাসস

এই বিভাগের আরও খবর