শেখ সাইফুল ইসলাম কবির: বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় হঠাৎ টমেটোর দরপতনে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। এ বছর টমেটোর উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা এ নিয়ে চাষিদের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটকে দায়ী করলেও পাইকাররা বলছেন ভিন্ন কথা। মাত্র দশদিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার টমেটো আজ
সোমবার (১৮ জানুয়ারী ) প্রতি কেজি ৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুনরায় দেনাগ্রস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
সরেজমিনে বাগেরহাটের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, টমেটো চাষে সার ও কীটনাশক তেমন ব্যবহার করতে হয় না। কম পরিশ্রমে অল্প ব্যয়ে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় জেলায় কৃষকরা টমেটো চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। ধান ও অন্যান্য ফসলের আবাদে খরচ বেশি হওয়ার কারণে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।
দূর্গাপুর মোড়ে আড়তে বিক্রি করতে আসা শান্তিপুর গ্রামের টমেটো চাষি শংকর বিশ্বাস জানান, হঠাৎ টমেটোর দরপতনে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। এ বছর টমেটোর উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা এ নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায় আছেন। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। তাদের ভাষায়, সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় পাইকারী ক্রেতারা মিলে চাষীদের ঠকাচ্ছেন।
পাইকারী ক্রেতা মোঃ রুহুল আমিনসহ অনেকে জানান, দেশের যে সব অঞ্চলে চিতলমারীর টমেটোর চাহিদা ছিল, সেই সব এলাকায় তাদের উৎপাদিত টমেটো বাজারে উঠেছে। তাই এ অঞ্চলের টমেটোর চাহিদা কমেছে। ফলে এই দরপতন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, সারাদেশে কমবেশী টমেটো পাকতে শুরু করেছে। আগাম যত সময় ছিল তত সময় চাষিরা বেশী দাম পেয়েছে। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে কোল্ড স্টোর থাকলে চাষীরা টমেটো সংরক্ষণ করে পরে বেশী দামে বিক্রি করতে পারত।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, বাগেরহাটে মাটির গুনগত মান খুবই ভাল। আর সময়মত টমেটো চারা রোপন করতে পারলে ফলন অবশ্যই ভাল হয়। বর্তমানে ধান ও পাটের খরচের তুলনায় দাম কম থাকায়, কৃষকেরা টমেটো চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। এই জেলায় এ বিষয়ে কোন প্রকল্প। তাই প্রকল্প অনুসারে কৃষকদের টমেটো চাষে উৎস দিতে পারলে ফলন ও চাষাবাদ আরও ভালো হতো।