এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট: সারাদেশের ন্যায় বাগেরহাটে চলছে ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট।
রোববার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের সমর্থনে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে পড়েছেন।
বাগেরহাট-খুলনা-ঢাকা মহাসড়ক, যশোর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও বাগেরহাট-খুলনা সড়কসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে বিকল্প যানবাহনেও যেতে পারছেন না যাত্রীরা।
বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মো. মনির হোসেনে বলেন, ‘ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে।’
বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম শেখ জানান, ‘জরুরি কাজে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হলেও তিনি যেতে পারেননি। মোরেলগঞ্জ বাসস্টান্ড থেকে বিকল্প যানবাহন ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল, ইজিবাইক, নছিমনেও চলাচল করতে দিচ্ছে না শ্রমিকরা।
পত্রিকা বিক্রেতা দীপক কুমার বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যশোর ও খুলনা থেকে প্রকাশিত কোনো আঞ্চলিক পত্রিকা আজ বাগেরহাটে পৌঁছায়নি।’
বাগেরহাট আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শ্রমিক নেতা মাসুম মোল্লা ওরফে ছোট বাবু বলেন, চালকরা ইচ্ছা করে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটায় । দেশে মোটর সাইকেল থেকে শুরু করে সব ধরণের যানবাহনেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। একজন চালক একটি বিড়ালও মারতে চায় না। কিন্তু নানা ঘটনাক্রমে দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর বাগেরহাট জেলা শাখার সদস্য সচীব এ্যাডভোকেট ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানা বলেন, জনস্বার্থে কিংবা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন আটকে গেছে পরিবহন-মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর কারণে। গত আট মাসে সারা দেশে অন্তত ২০ বার ধর্মঘট ডেকেছে এসব সংগঠন। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন যে ধর্মঘট পালন করছেন। তা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনী।
ধর্মঘটের নামে জনগণকে জিম্মি ও ক্ষতিগ্রস্থ করার দায় তাদের। শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের এ জন্য শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সম্প্রতি, পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন বাতিল ও ট্রাক চালক সোহেল হত্যার বিচারের দাবিতে সারাদেশের মতো বাগেরহাটে ও ৩০ অক্টোবর থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।