,

বছরের শেষ দিনও কুয়াকাটায় পর্যটক নেই

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটা। এখানে সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করেন দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক। বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও প্রথম সূর্যোদয় দেখতে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় ভিড় করে থাকেন। কিন্তু এ বছরের চিত্র পুরোটাই উল্টো। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন- রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটক শূন্য কুয়াকাটা।

৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন হোটেল-মোটেল নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কিন্তু আশানুরূপ কোনো বুকিং নেই কুয়াকাটার কোনো হোটেল-রিসোর্টে।

গত দুই মাস ধরে দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেশি হুমকিতে পর্যটন ব্যবসা রয়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর শীতের আগমনে পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত।

ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকে উপচেপড়া ভিড়। বিজয় দিবস, বড়দিন, খ্রিষ্টীয় নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন কুয়াকাটায়। কিন্তু এ বছরের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। কিছুটা হতাশ হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা হাসিবুল ইসলাম বলেন, পরিবার নিয়ে এই প্রথম কুয়াকাটায় আসলাম। বছরের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ করবো এবং কাল সকালে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখবো। বেশ ভালোই লাগছে আমার । তবে এত কম পর্যটক থাকবে কুয়াকাটায় সেটা আশা করিনি।

গাজীপুর থেকে আসা রাকিবুল ইসলাম বলেন, বছরের প্রথম দিনটি বিশাল সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে উপভোগ করার জন্যই মূলত কুয়াকাটা এসেছি । এই জায়গাটা অনেক সুন্দর, পরিবেশটাও অনেক ভালো। এ ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাটাও সন্তোষজনক। আমি এর আগে আরও কয়েকবার কুয়াকাটায় এসেছি।

থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে বড় ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন কুয়াকাটায় না হলেও প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলো তাদের নিজস্ব অতিথিদের জন্য কিছু অভ্যন্তরীণ আয়োজন রেখেছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

হোটেল মিয়াদ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আমাদের হোটেলে বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। তবে ইচ্ছে ছিল আশানুরূপ পর্যটক হলে হোটেলে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষ্যে একটি বড় আয়োজন করার। কিন্তু তেমন কোনো বুকিং আমরা পাইনি।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে কুয়াকাটায় এ বছর তেমন কোনো পর্যটকের চাপ নেই। বেশির ভাগ হোটেল-মোটেলগুলোই ফাঁকা। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসজুড়ে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম থাকলেও এ বছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। মূলত জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্যই পর্যটক আসছে না কুয়াকাটায়।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পরিদর্শক আবু হাসনাইন পারভেজ বলেন, প্রতি বছর ডিসেম্বর জুড়ে পর্যটকদের চাপ থাকে। কিন্তু এ বছর খুবই কম। তবে সার্বিকভাবে আমরা তৎপর রয়েছি। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আমরা বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে আমাদের টিম কাজ করছে। পর্যটক কম থাকলেও নিরাপত্তায় কোনো কমতি থাকছে না কুয়াকাটায়।

 

এই বিভাগের আরও খবর