,

‘প্রবাসে থেকেও’ পুলিশের ওপর হামলা মামলার আসামি!

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পক্ষের প্রায় দুইশ’র বেশি সদস্য আহত হন।

ওই ঘটনায় শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতেই পুলিশের পক্ষ থেকে পাকুন্দিয়া থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দেড় হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। মামলায় অন্যদের সঙ্গে আতিকুর রহমান লিটু (৪৫) ও মো. রাসেল (৩৫) নামের দুই প্রবাসীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় সৌদি আরব প্রবাসী আতিকুর রহমান লিটুর নাম রয়েছে ২৭ নম্বরে। দুবাই প্রবাসী মো. রাসেলের নাম রয়েছে ১০০ নম্বরে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আতিকুর রহমান লিটু ২০২১ সালে ২ আগস্ট ছুটি শেষে সৌদি আরবে ফিরে যান এবং মো. রাসেল গত দুই মাস হলো দুবাই প্রবাসী। তবে আতিকুর রহমান লিটু উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও রাসেল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ছিলেন। রাসেল উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিনের (ভিপি কামাল) চাচতো ভাই।

সৌদি আরব প্রবাসী আতিকুর রহমান লিটু উপজেলা নারান্দী ইউনিয়নের ছোট আজলদী গ্রামের শাফিউদ্দিন পাঠানের ছেলে। দুবাই প্রবাসী মো. রাসেল উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের চরতেরটেকিয়া গ্রামের ওয়াহাব মিয়ার ছেলে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল।

এ ঘটনায় সৌদি আরব প্রবাসী আতিকুর রহমান লিটু বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে আছি। এরমধ্যে গত বছর বাড়ি এসেছিলাম। তবে ২০২১ সালের ২ আগস্ট ছুটি শেষে সৌদি আরবে চলে আসি। সেই সময় তেকে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবেই আছি। কীভাবে এই মামলায় আমার নাম এসেছে বুঝতে পারলাম না। আমি কি সৌদি আরবে থেকে পুলিশের সঙ্গে মারামারি করেছি, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দুবাই প্রবাসী রাসেল বলেন, আমি দুই মাস হলো দুবাইয়ে চলে এসেছি। পুলিশের সঙ্গে মারামারি হলো পাকুন্দিয়ায়, কিন্তু আমি দুবাইয়ে বসেই আসামি, বিষয়টি হাস্যকর। আমার অপরাধ আমি বিএনপির সমর্থক, তাই দুবাইয়ে বসেই কি পুলিশের সঙ্গে মারামারি করেছি। বাড়িতে গিয়ে পুলিশ আমাকে না পেয়ে আমার বড় ভাই রহমতুল্লাহ রুবেলকে ধরে নিয়ে গেছেন।

ঘটনার দিন আতিকুর রহমান লিটু ও রাসেল প্রবাসে অবস্থানের দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মামলার বাদী পাকুন্দিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ কামাল বলেন, আমরা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেককে আটক করেছি। পরে তাদের থেকে শুনে অন্যদের নাম লিখেছি। অনেক সময় এমনও হয় অনেক নামের মধ্যে দুই-একটি এদিক-সেদিক হয়। তবে এক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত কোনও ভুল হয়ে থাকলে তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়অ হবে বলে জানান তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ হাসান সুমন বলেন, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। মামলার তদন্ত চলছে। আমি তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে যদি তাদের সম্পৃক্ততা না পাই বা যে তারা প্রবাসে আছে সেটা যদি প্রমাণিত হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর