নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবে বিজয়া দশমীর দিনে ভক্তরা নেচে-গেয়ে, ঢাকঢোল ও কাঁসর বাজিয়ে বিদায় জানান দেবী দুর্গাকে। একইসঙ্গে শুরু হয় সামনের বছরে দেবী দুর্গার আগমনের জন্য ভক্ত-পুণ্যার্থীদের অপেক্ষা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবের শেষ দিনে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় প্রতিমা বিসর্জন।
দেবীদুর্গাকে বিদায় জানানোর মুহূর্তে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আবেগ ও মন খারাপের মিশ্র অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কেননা দশমী মানেই এক বছরের জন্য তাদের দেবী দুর্গার বিদায়।
দশমীর দিন সকাল থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশের মণ্ডপগুলোতে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা। দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৩টায় শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
রাজধানীতে প্রথমে প্রতিমা বিসর্জন দেয় ধানমন্ডির সর্বজনীন পূজা কমিটি। তারপর ওয়ারীর শঙ্খনিধি মন্দির। তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান, মিষ্টি মুখে দিয়ে দুর্গাকে বিদায় জানাতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় বিসর্জন ঘাট ওয়াইজঘাটে ভিড় করেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। বিশেষত নারী পুণ্যার্থীরা মেতে ওঠেন আবির খেলায়। তারা একে অপরকে রাঙিয়ে দেন রং-সিঁদুরে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, সারা দেশে এ বছর ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ২৪৫টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের বিভিন্ন ঘাটে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর ২৪৬টি মণ্ডপের প্রতিমা একে একে বিসর্জন দেয়া হচ্ছে।
আগের দিন সোমবার ছিল শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী। দেবী দুর্গাকে বিদায়ের আয়োজনে উৎসবে মেতে ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ।
মণ্ডপে মণ্ডপে আরতি প্রতিযোগিতা দিনটিকে আরও উৎসবমুখর করে তোলে। তাদের প্রার্থনায় ছিল সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা। যেখানে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করে থাকবে শান্তি। ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টা ও বিভিন্ন বাদ্য, ধূপ আরতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় ছিল প্রাণখোলা উচ্ছ্বাস।
একইসঙ্গে ভক্ত-পুণ্যার্থীদের মাঝে ছিল বিদায়ের সুর। কেননা দশমীর দিনে বিদায় জানাতে হচ্ছে দেবীকে।