,

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘সাজানো ঘটনায়’ মামলা!

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের খাগড়াবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফায়েকুজ্জামান মোল্যা ও পরিবারের লোকজন।

ভূক্তভোগী ফায়েকুজ্জামান বলেন, ‘একটি জমি নিয়ে একই গ্রামের সাকাত মোল্যার সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরোধ চলছে। এরই জের গত ২৬ এপ্রিল সাকাত মোল্যার স্ত্রী তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আমরা ৬ ভাই, আমার স্ত্রী-সন্তান ও দুই ভাইয়ের স্ত্রীসহ ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের সাথে আমাদের কোন ধরণের ঘটনা ঘটেনি। অথচ মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট বের করে মামলাটি দায়ের করেছে। আমরা অপরাধ না করেও মামলার আসামী হয়ে অযথা হয়রানীর শিকার হচ্ছি। আমি পরপর তিনবার সুনামের সাথে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি এখন অসুস্থ, হার্টের রোগী। প্রতিপক্ষের মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে চাই। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মামলার ৯ নম্বর আসামী লাভলী বেগম ওড়াকান্দি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ সহকারি হিসেবে কর্মরত। তিনি গত ২৫ এপ্রিল থেকে দু’দিনব্যাপী ‘সুখী জীবন’ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলরুমে ‘প্রসবোত্তর পরিবার পরিকল্পনা’ বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। সেখানে হাজিরা শিটেও তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ তাকেও মামলার আসামী করা হয়েছে।

মামলার তিন নম্বর সাক্ষী নিজাম মোল্যার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার বিষয় কিছু জানি না। আমি ওখানে ছিলাম না। আমি মসজিদে ছিলাম। তবে শুনেছি তারা (তাসলিমা বেগম) আমাকে একটি মামলার স্বাক্ষী করেছে।’

প্রতিবেশি সোহেল শেখসহ কয়েকজন জানান, জমাজমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। কিন্তু তাদের জানামতে ওইদিন ওখানে কোন ঘটনা ঘটেনি। হয়তো ওই নারী মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন বলেও জানান তারা।

ওড়াকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদরুল আলম বিটুল বলেন, ‘ওখানে মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। জমি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আমি বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েকবার সমাধান করে দিয়েছি। কিন্ত সাকাত মোল্যার পরিবার তা মানেন না। উল্টো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একটা মামলা দিয়েছে।’

মামলার বাদী মোসা. তাসলিমা বেগমের কাছে মামলার ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যা হওয়ার আদালতে হবে। এর বাইরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে কোন ধরণের বক্তব্য দিতে রাজি হননি।’

কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মাদ মাসুদ রায়হান বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে সঠিক প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে।’

-লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর