: রাজবাড়ী জেলায় পদ্মার তীরে বন্যা পরবর্তিতে জেগে ওঠা চরে চাষা করা হয়েছে উন্নত জাতের টমেটো। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম চাষ করা এই টমেটোর এবার বাম্পার ফলন ফলেছে। দামও ভালো পাওয়ায় লাল সবুজ টমেটো হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। রাসায়নিক সার ছাড়াই উৎপাদিত টমেটো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ বছর ৮৩৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে ৩৭৫ হেক্টরই রাজবাড়ী সদর উপজেলায়। এছাড়াও গোয়ালন্দ উপজেলায় ৩০০ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৮৫ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ৩৮ হেক্টর ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩৭ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে আড়াই টনের বেশি টমেটো উৎপাদন হচ্ছে।
.রাজবাড়ী জেলা সদরের বরাট, মিজানপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ ইউনিয়নের ৩০০ হেক্টর চর জমির মধ্যে এবার ১৫০ হেক্টর জমিতে হয়েছে সবজি চাষ। যার মধ্যে প্রায় ১২০ হেক্টরেই কৃষকেরা আবাদ করেছে উচ্চ ফলনশীল টমেটো।
জেলা সদরের বরাট ইউনিয়নের টমেটো চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ বছর বিপুল প্লাস, বিউটি ফুল, বিপুল, বিগল, হাইটম, সফল, অনন্যাসহ উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাতের টমেটো চাষ করে ফলন হয়েছে ভালো। বাজারের চাহিদা রয়েছে, দামও পাওয়া যাচ্ছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা। এখন প্রতি সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ মণ করে টমেটো বাজার বিক্রি করছি।’
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের চাষি ইকবাল সরদার বলেন, ‘এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা হয়েছে। আমরা ভালো দাম পেয়ে খুশি।’
.জেলা সদরের বরাট ইউনয়নের টমেটো চাষি আব্দুর রশীদ শেখ বলেন, ‘পদ্মার চরের জমি পলি মাটিতে অধিক উর্বর। জমিতে উন্নত জাতের টমেটো চাষ করায় হেক্টর প্রতি প্রায় ৬০০ মণ ফলন হয়েছে। এখন বাজারে দাম ভালো পেলেই কৃষকেরা লাভের মুখ দেখবে।পুষিয়ে নিতে পারবে বন্যার ক্ষতি। পাশাপাশি জেলা সদর কৃষি অফিস থেকে পাওয়া পরামর্শে চাষাবাদ করায় আল্লাহর রহমতে গতবারের চেয়ে টমেটোর ফলন ভালো হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) ড. মো. মোশাররফ হোসেন জানান, কৃষকদের সেক্স ফরোমোন ফাঁদ দ্বারা ক্ষতিকর পোকা দমন, টমেটোর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই, উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা ও সুষম মাত্রায় সার, কিটনাশক ব্যাবহারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষক লাভের মুখ দেখছেন। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজবাড়ী সদরের টমেটো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন কৃষকরা।