,

নিখোঁজের ১৭ বছর পর বাড়ি ফেরা

গোপালগঞ্জ: নিখোঁজের ১৭ বছর পর বাবার বাড়ি ফিরেছেন মেয়ে তানিয়া আক্তার (২৫)। বাবার বাড়িতে স্বামী, শ্বশুর, ছেলেমেয়ে নিয়ে উৎসবমুখর দিন কাটাচ্ছেন তানিয়া।

তাকে এক নজর দেখতে প্রতিদিন তানিয়ার বাবার বাড়িতে ভিড় করছেন লোকজন। মেয়ে ফিরে পাওয়ার আনন্দে প্রতিদিনই তার বাড়িতে আগতদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করছেন তার বাবা। তাদের কাছে মেয়ের জন্য দোয়াও চাইছেন। ফেসবুকের কল্যাণে সম্প্রতি বাবা-মার সন্ধান পেয়েছেন তানিয়া।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বাগান উত্তরপাড় গ্রামের সুন্দর আলী সিকদারের মেয়ে তানিয়া। ২০০৪ সালের ঢাকা শহরে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন তানিয়া। এরপর কোট গেছে ১৭টি বছর। এর মধ্যে তানিয়া ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা আরজুদা খাতুন মিলনের বাড়িতে প্রতিপালিত হয়েছেন। মিলনের ছেলে কলাবাগান মসজিদের ইমাম (বর্তমানে জার্মান প্রবাসী) রিপন তাকে পিতৃস্নেহে বড় করেছেন। তাকে কোনো দিন বাবা-মায়ের অভাব বুঝতে দেননি তিনি। ২০১৫ সালে তানিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেন তারা। বর্তমানে তানিয়া এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী। তাদের ফিরে পেয়ে এখন সময় বেশ ভালো কাটছে সুন্দর আলীর।

তানিয়ার বাবা সুন্দর আলী সিকদার বলেন, ২০০৪ সালে তানিয়ার বয়স ছিল আট বছর। তখন তাকে ঢাকায় বেড়াতে নিয়ে যাই। আগারগাঁওয়ে আমার ফুফুর বাসায় তাকে রেখে গ্রামে চলে আসি। সেখান থেকে তানিয়া নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তেজগাঁও ও কোটালীপাড়া থানায় জিডি করি। পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিই। তানিয়াকে পাগলের মতো ঢাকায় খুঁজেছি। কিন্তু মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। তানিয়া নিখোঁজ হওয়ার পর আমি শুধু ছটফট করেছি। গত ৮ জানুয়ারি ফেসবুকে তানিয়ার ছোটবেলার ছবি পোস্ট করেন জামাই আনোয়ার হোসেন। সঙ্গে আমার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের নাম দেখে কোটালীপাড়ার ইমরান ঘরামীর স্ত্রী লাবণ্য ওরফে পলি আমাকে বিষয়টি জানান। তিনি ফেসবুক থেকে আমার জামাইয়ের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দেন। মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলে মেয়ের সন্ধান পাই।

তানিয়া আক্তার বলেন, ঢাকায় বাবার ফুফুর মেয়ের সঙ্গে আমি স্কুলে যাই। স্কুলের দারোয়ান আমাকে স্কুলে ঢুকতে দেয়নি। বাসার রাস্তা না চেনায় আমি পথ হারিয়ে সংসদ ভবনের সামনে চলে যাই। সেখানে সারাদিন বড় পর্দায় টেলিভিশন দেখি। রাত হলে কান্নাকাটি শুরু করি। এক হিন্দুলোক আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তার বোনের বাড়িওয়ালার স্ত্রীর মা আরজুদা বেগম মিলন ও তার ছেলে রিপন আমাকে তাদের সঙ্গে কলাবাগানের বাড়িতে নিয়ে যান।

এই বিভাগের আরও খবর