,

নষ্ট বেরিয়ারে ‘অরক্ষিত রেলক্রসিং’

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশাল-নান্দাইল সড়ককে আউলিয়া নগরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে তিন বছর ধরে বেড়িয়ার নষ্ট থাকার কারণে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছে যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ত্রিশাল-নান্দাইল সড়কের উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের আউলিয়া নগরে বেড়িয়ার নষ্ট থাকার কারণে ঝুঁকি নিয়ে পথচারিসহ হাজারো ছোট বড় যানবাহন চলাচল করছে। ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী এ রেল পথে সারাদিন ট্রেন যাতায়াত করে। ট্রাফিক গেইটম্যান লোহার লোহার চেইন দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে। দিনের বেলা চেইন দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা গেলেও রাতের বেলা হয় সমস্যা। অনেকে লোহার চেইন না দেখে রেলক্রসিং পারাপার হচ্ছে। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সিএনজি চালক রায়হান মিয়া বলেন, রেলক্রসিং গেইট আটকানোর জন্য বেড়িয়ার অনেক দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছি। লোহার চেইন দিয়ে আটকালেও অনেকেই তা মানছে না। এখানে ছোট খাটো দুর্ঘটনা সব সময় লেগেই আছে। গেইটম্যান থাকলেও সে সব সময় থাকে না। এটা ঠিক না করলে যে কোনো সময় ঘটবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সাধারণ পথচারি অনেকেই বলেন, এ রেলক্রসিং অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগে অনেকেই এখানে বিপদে পড়েছে। লোহার চেইন দিয়ে পারাপারে নিয়ন্ত্রন করলেও অনেকেই তা দেখে না। গেইটম্যান অনেক সময় না থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের বেলায় আরও বেশি সমস্যা হয় যানবাহনের লাইট না থাকার কারণে চেইন দেখাযায়না। গাড়ি না থেমে চেইন ছিড়ে নিয়ে চলে যায়। বড় একটা দুর্ঘটনা না ঘটার আগে কর্তৃপক্ষ নজরে আসবে না।

স্কুল শিক্ষার্থী সাফওয়ান সাদাত বলেন, আমাদের স্কুল রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি। তাই এপথ দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করি। অনেক দিন ধরে দেখছি রেলক্রসিংয়ের বেড়িয়ার নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। গেইটম্যান লোহার চেইন দিয়ে রাস্তা আটকায়। চেইন অনেক সময় দেখাযায়না তাই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা লেগেই আছে। আমাদেরও রাস্তা পারাপাড়ে অনেক সমস্যা হয়। কখন যেন ট্রেন চলে আসে ভয়ে ভয়ে থাকি।

ট্রাফিক গেইটম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, এখানে দুটি বেড়িয়ার ছিল। একটি অনেক দিন যাবৎ নষ্ট। আরেকটি ঝং ধরে ভেঙ্গে পড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। লোহার চেইন দিয়ে কোনো রকম আটকানোর ব্যবস্থা করেছি। তবে, অনেকেই লোহার চেইন অতিক্রম করে চলে যায়। মানতে চায়না। রাতের বেলা চেইন না দেখে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। আর এখানে কোনো ট্রাফিক বক্স নেই। যার কারণে রোদ, বৃষ্টিতে বসে থাকা যায় না। কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জানিয়েছি। এর সমাধান না করলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

আউলিয়া নগর স্টেশনে যোগাযোগ করলে দায়িত্বরত রায়হান নিজেকে স্টেশন মাস্টার দাবি করে বলেন, এটা আমাদের রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগের আন্ডারে। আমি তাদেরকে অনেকবার এ বিষয়ে জানিয়েছি। তারা বলেছে বাজেট নাই। অনেক দিন ধরে বেড়িয়ার নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আর এখানে গেইটম্যান আছে তবে, ট্রাফিক বক্স না থাকার কারণে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা অনেকদিন নিজ উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে নিয়ন্ত্রন করেছি। এখন গেইটম্যান লোহার শিকল দিয়ে রেলক্রসিং নিয়ন্ত্রন করছে।

আউলিয়া নগর স্টেশন মাস্টার হাসান আজিজুর রহমান বলেন, এটা দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। আপাদত লোহার শিকল দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। এখানে ট্রাফিক বক্সের কোনো ব্যবস্থা নাই। গেইটম্যানের সমস্যা হয়। আমি উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর