‘ধর্ষণের’ ফলে কিশোরীর অপরিণত বাচ্চা হওয়ার পর মারা গেছে গত শুক্রবার।
কিশোরী তার বাবার সঙ্গে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় জয়নারায়ণপুর গ্রামে শামীম মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থেকে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে।
কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন স্থানীয় সাহিদ মোড়লের ছেলে আক্তার মোড়ল।
“আক্তার তার চার সহকর্মীসহ আমার মেয়েকে রাস্তা থেকে ধরে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনা ফাঁস করলে মেয়েকে ও আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ কারণে মেয়ে আমাকে ঘটনা জানায়নি। পরে শারীরিক পরিবর্তন দেখে চাপ দিলে ঘটনা জানাজানি হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর আক্তার তার সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে এসে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গর্ভপাতের ওষুধ খাইয়ে যায়।”
পরদিন হাসপাতালে তার অপরিণত বাচ্চার জন্ম হয় বলে চিকিৎসক জানান।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জয়শ্রী দাস বলেন, “অপরিণত বাচ্চা ও মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নেওয়ার পথে নবজাতকের মৃত্যু হয়।”
পরদিন কিশোরী তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দেয়।
বাবার অভিযোগ, “থানা থেকে বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীপুর থানার এসআই এখলাস উদ্দিন ফরাজী বাসায় এসে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন।
“স্বাক্ষর না দেওয়ায় আমাকে মারধর করেন এসআই। পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে এ ঘটনায় মামলা হয়।”
এরপর পুলিশ আসামি না ধরে কিশোরীর পরিবারকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ।
কিশোরীরর বাবা বলেন, “রাতে আসে এলাকার সন্ত্রাসীরা। দিনে আসে পুলিশ। তারা মামলা তুলে নিয়ে আপস করতে প্রস্তাব দেয়। তাদের ভয়ে কয়েক দিন ধরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে বাবা-মেয়ে ঘরে বসে আছি।”
বাড়ির মালিক শামীম মিয়া অভিযোগ করেন, “চার দিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় মেয়ে ও তার বাবা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। অভয় পেলে জানালা দিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন।
“বাবা-মেয়েকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য আমাকেও হুমকি দিচ্ছে। সাদা কাগজে বাবা-মেয়ের স্বাক্ষর আদায় করে দেওয়ার জন্য এসআই এখলাস আমাকেও চাপ দিচ্ছেন। এ অবস্থায় আমরা আতঙ্কে আছি কখন জানি কি হয়ে যায়।”
এসআই এখলাস সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “কিশোরীর বাবাকে মারধর করিনি। সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া বা আপস করার প্রস্তাব দিইনি।”
পুলিশ আসামি ধরার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাদি।
তিনি বলেন, “থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর ১৫ ডিসেম্বর মামলা আমলে নেওয়া হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।”