,

তাই বলে এভাবে মারধর

জেলা প্রতিনিধি, নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে মোবাইল ব্যাংকিং নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে কৌশলে বয়স্ক ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধা দাদি ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাদাকে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করেছে নাতি ও নাতি জামাই।

ঘটনার তিনদিন পর বুধবার (১৪ জুলাই) স্বজনদের অনুরোধে দাদাকে বাড়িতে তুলেছে তারা। তবে দাদি এখনও আত্মীয়-স্বজনদের আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন আর বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

গত সোমবার (১২ জুলাই) উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের জোয়াড়ী সৈয়দ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা হলেন- জোয়াড়ী গ্রামের হুজুর আলী (৮০) ও তার স্ত্রী আদরী বেগম (৭৫)। বুধবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় থানার প্রধান ফটকের সামনে বড়াইগ্রাম পৌরসভার মেয়র মাজেদুল বারী নয়নকে পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার কাছে বিচার চান আদরী বেগম।

আদরী বেগম জানান, তার স্বামী হুজুর আলীর নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড রয়েছে। গত ৬ জুলাই তার মোবাইলের নগদ অ্যাকাউন্টে তিন মাসের বয়স্ক ভাতার দেড় হাজার টাকা আসে। ১০ জুলাই তিনি নাতি লিটন হোসেনকে (২০) তার মোবাইল দিয়ে নগদ এজেন্টের কাছ থেকে টাকা বের করে আনতে বলেন। কিন্তু সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে লিটন জানান- মোবাইলে কোনো টাকা আসেনি।

পরদিন আদরী বেগম নিজেই মোবাইল নিয়ে নিকটস্থ নগদ এজেন্টের কাছে যান। এ সময় তিনি জানতে পারেন তার স্বামীর নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছিল। আগের দিন তার নাতি লিটন টাকা তুলে নিয়ে গেছে। পরে বাড়িতে এসে বিষয়টি জানতে চাইলে তার ছেলে অহিদুল ইসলাম ও নাতি লিটন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে তারা আদরী বেগম ও তার স্বামীকে আম গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন।

এ সময় লিটন ও সেখানে উপস্থিত লিটনের ভগ্নিপতি পাশের বালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম তাদেরকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন তারা।

এদিকে তিনদিন এদিক সেদিক থাকার পর বুধবার বিকেলে হুজুর আলীকে বাড়িতে উঠালেও আদরী বেগমের জায়গা হয়নি সেখানে। উল্টো পুনরায় মারপিটের হুমকির কারণে তিনি এখন স্বজনদের বাড়িতে অসহায় জীবনযাপন করছেন।

জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চান মোহাম্মদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি এবং কিছু জানিও না। তবে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম পৌরসভার মেয়র মাজেদুল বারী নয়ন বলেন, বর্তমান সরকার বয়স্কদের জন্য ভাতা দিচ্ছেন। ঘরে বসেই তারা যেন টাকা পায় সেজন্য নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হচ্ছে। অথচ এভাবে তাদের ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং উল্টো পিটিয়ে ঘর ছাড়া করাটা খুবই গর্হিত কাজ। এদের উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।

বড়াইগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে আদরী বেগমের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দুজনের সঙ্গে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যা যা করণীয় সব কিছু করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর