বিডিনিউজ ১০, স্বাস্থ্য ডেস্ক: এবারের ডেঙ্গু খুব atypical presentation নিয়ে হাজির হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে কথাগুলো বলছি। ডেঙ্গুর এবারের মূল ফোকাস প্লাজমা লিকেজের দিকে, hypovolemia হয়ে organ perfusion কমিয়ে দিচ্ছে। প্লাজমা লিকেজ এবং এক্সট্রিম সেলুলার ডিহাইড্রেশনের কারণে severe lactic acidosis হচ্ছে।
মানুষের মধ্যে একটা সাধারণ ধারণা জন্মেছে যে, ডেঙ্গুতে ভীষণ জ্বর হয়, শরীরে র্যাশ ওঠে, প্লাটিলেট কমে। কিন্তু এবারের ডেঙ্গুতে শরীরে র্যাশ কম উঠছে রোগীর। শরীরে ব্যথাও কম। প্লাটিলেটও তেমন কমছে না। মূল ফোকাসটা এবার সেলুলার ডিহাইড্রেশন এবং প্লাজমা লিকেজের ওপর। রোগীর শরীরের মাইক্রো ভাসকুলেচারে লিকেজ হচ্ছে। কিন্তু রোগী টের পাচ্ছেন না।
চিকিৎসক সহকর্মীদের বলব- মূল ফোকাস দিন ব্লাড প্রেসারে। মনে রাখবেন, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ফ্লুইড লস না হলে hypovolemic shock-এর ক্লিনিক্যাল ফিচার আপনারা পাবেন না। কাজেই বিপি কমে যাওয়া মানে- রোগী ইতিমধ্যেই তার ৩০-৪০ শতাংশ ফ্লুইড ভলিউম হারিয়েছে। তাই বিপি-র ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। যদি ডায়াস্টোলিক বিপি বাড়তি পান, ধরে নেবেন পাল্স, প্রেসার কমছে রোগীর। প্রতিটা অর্গান পারফিউশনের জন্য ন্যূনতম ৬০-৭০ মিমি. MAP (mean arterial) pressure প্রয়োজন। পাল্স, প্রেসার কমে যাওয়া শকের প্রাথমিক লক্ষণ। খেয়াল রাখুন।
জ্বরের পরে রক্তের LFT, CRP করান, রিপোর্ট আপনাকে ধারণা দেবে শক লিভার সম্পর্কে। serum creatinine টেস্ট করিয়ে রাখুন। যদি ডায়াস্টলিক বিপি বেশি পান, তাহলে 2-3 ml/kg/BW/hour হিসেবে সাপ্লিমেন্টারি ক্রিস্টালয়েড দিতে পারেন (তবে প্রগ্রেসিভ শক বা স্টাবলিশ্ড শকে কোলয়েড+ক্রিস্টালয়েড)। রোগী মুখে খাবার খাবে। ন্যাশনাল গাইডলাইন অনুসরণ করুন। ভিটামিন দিন রোগীকে, যা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে মারাত্মক কার্যকর। স্যালাইনেও ইঞ্জেকশন Ascason 1 amp করে দিয়ে রাখুন।
ইউরিন আউটপুট খেয়াল রাখুন। বোতলে দাগ কেটে রোগীকে সেখানে প্রস্রাব করতে বলুন। ন্যূনতম আউটপুট 1ml/kg/hour হতে হবে। কিছু কিছু রোগী gastroenteritis পাতলা পায়খানা নিয়ে আসছে। অ্যাবডমিনাল পেইন হলে অবশ্যই টঝে টেস্ট করিয়ে নেবেন। Lungs base auscultation করুন। রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা বা অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে কিনা খেয়াল রাখুন। ECG, TropI করিয়ে রাখুন। ভাইরাল myocarditis / pericarditis নিয়ে সতর্ক থাকুন। মনে রাখবেন, কোনো ঘঝঅওউঝ নয়, শুধু প্যারাসিটামল। No antiplatelet nwo without excluding dengue perfectly.
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটোই এডিস মশা দিয়ে ছড়ায়। আমরা কিন্তু এখনও নিশ্চিত নই- ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিজেদের মধ্যে জেনেটিক কোড, জিনোম আদান-প্রদান করে শক্তিশালী কোনো strain জন্ম দিয়েছে কিনা!
ডা. আসিফ সৈকত : রেজিস্ট্রার, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ডিপার্টমেন্ট, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা