বিডিনিউজ ১০, আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে বিদায় নেওয়াদের তালিকা আরও দীর্ঘ হলো। এবার পদত্যাগ করলেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক ড্যান কোটস।
চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কোটস পদত্যাগ করবেন বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন ট্রাম্প। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন কংগ্রেসম্যান জন র্যাটক্লিফ। ট্রাম্পের মতে, র্যাটক্লিফ দারুণ নেতৃত্ব দেবেন এবং ‘দেশের সুনাম বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন’।
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে প্রায়ই বিতর্কে জড়িয়েছেন ট্রাম্প ও কোটস। ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাবেক সিনেটর কোটস একজন রাশিয়াবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। শুরুতে তার কট্টর সমালোচনা করলেও ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তাকেই জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব দেন ট্রাম্প।
সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সাবেক সদস্য কোটসকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলেন ট্রাম্প। তারই নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তা কার্যত তার বিপক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। গত জানুয়ারিতে গোয়েন্দা প্রধানকে ডেকেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে ইরান ইস্যুতে তাদের মতামত চাওয়া হয়েছিল। সেখানে ইরানের হুমকির বিষয়ে তার ‘নিষ্ক্রিয়’ ও ‘সাধাসিধা’ মূল্যায়ন মোটেই পছন্দ হয়নি ট্রাম্পের।
গত বছর ফিনল্যান্ডে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের কথা শুনে বেশ অবাক হয়েছিলেন কোটস। তার মতে, ওই সাক্ষাৎ নাকি ‘স্পেশাল’। তবে পরে এজন্য তিনি ক্ষমাও চেয়ে নেন। ট্রাম্পের প্রতি সেসময় তার আনুগত্য দেখে অনেকে অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের বিদায়ের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। ফলে প্রশাসনে ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করার মতো আর তেমন কেউ কার্যত নেই বললেই চলে।
তবে নতুন পরিচালক র্যাটক্লিফের নিয়োগ সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। যদিও তার অনুমোদন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এর মাধ্যমে ট্র্যাম্পের সমচিন্তার আরেকজন প্রশাসনে যুক্ত হলেন বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অনেকে। এর আগে র্যাটক্লিফ ছিলেন আইনজীবী। টেক্সাস থেকে তিনবার রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিতও হয়েছেন। বর্ণবাদী ও শরণার্থীবিরোধী মন্তব্যের জন্য এর আগে অনেকবারই সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের সঙ্গে র্যাটক্লিফের সম্পৃক্ততা অবশ্য অন্য খানে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হতক্ষেপ নিয়ে রবার্ট মুলারের যে তদন্ত করেছেন তা নিয়ে শুনানিতে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন র্যাটক্লিফই তুলেছেন। গত ১৯ জুলাই তদন্ত নিয়ে আলোচনায় বসেনে ট্রাম্প ও র্যাটক্লিফ। কিন্তু শুনানির পাঁচদিন পর তাকে সোজা জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান বানিয়ে দিয়েছে।
এদিকে র্যাটক্লিফের নিয়োগে মার্কিন রাজনীতিতে একটা ছোটখাটো ঝড় বইয়ে দিয়েছে। এমনকি বিরোধিতা করেছেন ট্রাম্পের নিজ দলের বিশিষ্ট নেতৃত্ব। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির চেয়ারম্যান ও নর্থ ক্যারোলিনার সিনেটর রিচার্ড বার জানিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে র্যাটক্লিফ একটু বেশিই রাজনৈতিক।