,

জিম্মায় রাখা কার্গো বিক্রি করে দিলেন ইউপি সদস্য!

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে প্রশাসনের নির্দেশনায় জিম্মায় থাকা একটি কার্গো জাহাজ প্রকাশ্যে চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেশবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাজাহান গাজীর বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে তেঁতুলিয়া নদীর কেশবপুর পয়েন্টে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন থেকে চুরি করা আনা ১৪টি মহিষসহ ওই কার্গোটি আটক করেন কেশবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু। আটকের সময় চোরের দল মহিষসহ কার্গোটি ফেলে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কেশবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি এবং কেশবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু বলেন, উদ্ধার করা মহিষগুলো চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলকাচ মোল্লার মাধ্যমে মহিষের মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তৎকালীণ বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এবং উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান মৌখিকভাবে ওই কার্গোটি কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখতে বলেন। আমরা তখন একটি রেজুলেশন করে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাজাহান গাজী ও রিপন চৌকিদারের জিম্মায় ওই কার্গোটি রাখি।

এদিকে প্রশাসন ও পুলিশকে কিছু না জানিয়ে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এবং শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) শাহজাহান গাজীর নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮ সদস্যের একটি দল ৪টি কার্টার মেশিন দিয়ে কার্গোটির সকল লোহার প্লেট কেটে বিক্রি করে দেয়। খবর পেয়ে বাউফল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সামান্য কিছু প্লেট রেখে ঘটনার সাথে জড়িতরা পালিয়ে যায়। কার্গোটিতে নূন্যতম ৫ থেকে ৬ টন লোহার প্লেট ছিলো বলে জানা গেছে। যার বর্তমান মূল্য ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা।

এছাড়াও সুযোগ সন্ধানী বহুদলীয় এই নেতার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ মৌসুমে জেলেদের দিয়ে ইলিশ শিকার, ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনসহ জোর জবরদস্তির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এলাকায় তৈরী করছেন ত্রাসের রাজত্ব। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ।

এ বিষয়ে কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং একাধারে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতা শাজাহান গাজী বলেন, কে বা কাহারা কার্গোটির লোহার প্লেটগুলো কার্টার দিয়ে কেটে নিয়েছে তা আমি জানি না। অন্যান্য জোর জবরদস্তির অভিযোগও সত্য নয়, আর আমি কোনো দলও করি না, কারা কোথায় আমার নাম লিখেছে আমি জানি না, আমি মেম্বারি করি।

বাউফল থানার ওসি মো. আল মামুন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে ঘটনার তদন্ত চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর