,

জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর

বরিশাল ব্যুরো: বরিশাল নগরীতে জমি জমা বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে। মোটরসাইকেল ভাঙচুর থেকে শুরু করে ঘর বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। একজনকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডের হাজেরা খাতুন স্কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত সৈয়দ মিজানের খালাতো ভাই নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর পূর্বে আমি (নজরুল ইসলাম) ও তিন বছর পূর্বে দেলোয়ারা বেগমের পরিবার হাজেরা খাতুন স্কুল এলাকায় ৭ শতাংশ করে  ১৪ শতাংশ জমি ক্রয় করি। আমি প্রবাসে থাকায় আমার জমির দেখাশোনা করে খালাতো ভাই সৈয়দ মিজান। জমিতে মিজান বাসা করে বসবাস করে আসছেন। গত তিন মাস পূর্বে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম ও দেলোয়ারা বেগমের ছেলে সাইমনসহ তার সহযোগীরা মিজানের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

মিজান বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ফোন করে জানাই। এতে সাইমনসহ অন্যান্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এমনকি সৈয়দ মিজানকে বাসা থেক বের করে দিয়ে ওই দুই পরিবারের জমি জবর দখল করে সাইমন ও তাদের সহযোগী মৃত কাঞ্চন আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, পান্নু হালাদার, টিটু হাওলাদার সহ তাদের সহযোগীরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ আমি প্রবাস থেকে দেশে ফিরে।

আমার জমি জবরদখল করার বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনকে জানানো হলে সাবেক কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লার ডাকে ঘটনার দিন সকাল ১০টায় সালিশ মীমাংসায় বসা হয়।

নজরুল ইসলাম আরও জানান, সালিশ মীমাংসার একপর্যায়ে সমঝোতার বিষয়টি মাথায় নিয়ে নগদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা ও চেকের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে সমঝোতা শেষে নগদ ৫ লাখ টাকা যখন দেওয়া হয় এরই মধ্যে একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ সাইমন এবং তাদের সহযোগী কাঞ্চন আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, পান্না, টিটু, সাইমনের মা দেলোয়ারা বেগম, কাঞ্চন আলীর স্ত্রী লাল বরুসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিজানকে হত্যার চেষ্টায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মাথার উপর মারাত্মক জখম করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আঘাতে মিজানের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহাদি হাসান সাইমন বলেন, একটি জমি নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটি পক্ষের ঝামেলা রয়েছে। প্রায় দেড় থেকে দুইশ লোক একটি রিভলভার ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের জমিতে থাকা ভাড়া দেওয়া দুইটি ঘরে হামলা চালায় প্রথমে। পরে আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আমাদের বসত ঘরে হামলা চালায় ও আমাদের বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। পুলিশের উপস্থিতিতে এই হামলায় আমার মা দেলোয়ারা বেগম, মামী রহিমা বেগম, নানু লাল বরু ও মামা ফারুখ হাওলাদার আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আমরা কারো ওপর হামলা চালাইনি এবং তাদের হামলা প্রতিরোধেরও সুযোগ পাইনি। মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে আমাদের ওপর।

বরিশালের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, পুলিশের সামনে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। জমিজমা বিরোধকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিল। কয়েকজন আহত আছে শুনেছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪-৫ জনকে আটকও করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর