চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: একটি ফেস্টুন নষ্ট করার অভিযোগ এনে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে পেছনে হাত বেঁধে শিক্ষকরা বেধড়ক পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বড়গাছী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
রুহান আহমেদ নামে ওই ছাত্রকে গুরুতর আহতাবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রুহান ছোট জামবাড়িয়া গ্রামের বিশারত আলীর ছেলে।
আহত রুহান ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি বিদ্যালয় সরকারীকরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের ছবি সংবলিত ফেস্টুন বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে টাঙানো হয়। কে বা কারা রাতের আঁধারে ফেস্টুন থেকে সাবেক এমপির ছবির গলা কেটে দেয়। এ ঘটনার দায় চাপানো হয় দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র রুহান আহমেদের ওপর। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের ল্যাবকক্ষে রুহানকে ডেকে নেন। শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদে রুহান ফেস্টুন ছেঁড়ার কথা অস্বীকার করে। পরে সেখানে উপস্থিত প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা তার দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে ক্রীড়া শিক্ষক মাসুদ আহম্মেদ লাঠি দিয়ে তাকে পেটাতে থাকেন। একটি লাঠি ভেঙে গেলে আরও একটি লাঠি এনে একনাগাড়ে পিটুনি চলে। ঘটনার কথা স্বীকার না করলে শিক্ষকরা রুহানসহ তার পরিবারকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন।
পিটুনি খেয়ে রুহান গুরুতর আহত হলে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় একজন পল্লী চিকিৎসককে ডেকে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে স্বজনরা এসে দ্রুত তাকে ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তাহমিদুল ইসলাম তমাল বুধবার সমকালকে জানান, লাঠির আঘাতে রুহানের শরীরের অনেক স্থানে কালশিটে এবং ফোলা দেখা গেছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ছেলেটির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
অভিযোগের বিষয়ে বড়গাছী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা পারভীন বলেন, তিনি ঘটনাটি জেনেছেন এবং তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছেন। দায়ী শিক্ষকদের নিয়ে প্রধান শিক্ষককে তার কার্যালয়ে আসতে বলেছেন।