জেলা প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলার পূর্ব রশুনিয়া এলাকার শাহজালাল নামে এক পানফকিরের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা। পান ও ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় এলাকাবাসীর রোষানল থেকে বাঁচতে পানফকিরের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম (৩৮) ও তার সহযোগী ছোটভাই মো. শাহ মোয়াজ্জেম থানা পুলিশকে খবর দেন।
স্থানীয়রা জানান, সিরাজদিখান উপজেলার উত্তর রশুনিয়া গ্রামের দিনমজুর পানফকির শাহজালাল (৪৫) ২০১০ সালে স্বপ্নে সৃষ্টিকর্তার অলৌকিক আশীর্বাদ পেয়েছেন বলে তার কিছু দালালদের দিয়ে এলাকায় প্রচার চালান।
স্থানীয় মো. রফিকুল ইসলাম, রহমত উল্লাহ, পাপড়ি দেবনাথসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, কথিত পানফকিরের দালালরা এই বলে প্রচার চালান যে পানফকির স্বপ্নে আধ্যাত্মিক শক্তির বলিয়ান হয়েছেন এবং যে কোনো মানুষের অতীত ও ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন।
এর পর আস্তানা গড়ে তোলার পর সেখানে চিকিৎসার নামে চলে প্রতারণা। একই সঙ্গে ওই আস্তানায় গড়ে তোলেন নারীদের নিয়ে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও মাদকের আড্ডা।
ভণ্ড ফকিরের কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশীরা জানান, শাহজালাল তার অবৈধ প্রতারণা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় উঠতি নেতাদের নিয়মিত মাসোহারা দেন। যে কারণে ওসব নেতার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পেত না।
প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী ফতুল্লা থানার গৃহবধূ রোসনা বেগম (২৭) অভিযোগ করেন, আমার কিছু সমস্যার কারণে পানফকিরের কাছে যাই। প্রথমে ১০১ টাকা ফি নেন। পরে তেলপড়া, পানিপড়া দিয়ে এক হাজার ১০০ টাকা হাতিয়ে নেন। এতে কোনো সুফল না পেয়ে পুনরায় তার কাছে গেলে ছাগল গোসল দেওয়ার নামে আমার কাছ থেকে আট হাজার ৬০০ টাকা হাতিয়ে নেন।
তবে পানফকির শাহজালাল বলেন, আমি কোনো টাকাপয়সা নিয়ে চিকিৎসা দিই না। আমি কাউকে ডেকে আনি না। আমি আল্লাহর নাম করে দোয়া করে এবাদতের মাধ্যমে চিকিৎসা করি। এতে কেউ প্রতারণার শিকার হয় এটা আমি মনে করি না। আমি যেহেতু কারও নিকট কোনো টাকাপয়সা চাই না। এতে মানুষের প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এলাকার কিছু খারাপ ছেলে আমি না থাকায় আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। আমি এর বিচার চাই।
সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলাম সুমন জানান, উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন পানফকিরের আস্তানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।