আন্তর্জাতিক ডেস্ক: খুব শিগগিরি অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলে বাপটলার কাছে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম আঘাত করবে। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম বঙ্গোপসাগরের ওপর অবস্থান করছে। ঝড়ের প্রভাবে চেন্নাইতে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় গতকাল সোমবার থেকেই। সেখানে বৃষ্টি থেমে গেলেও শহরের বেশিরভাগ অংশ পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির বেশিরভাগ জায়গায় আজ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতে এখনও পর্যন্ত চেন্নাইতে অন্তত আটজনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ সোমবার এক্স(সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে বলেছে, ‘তীব্র আকারের ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম বঙ্গোপসাগর বরাবর দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে গত ৬ ঘন্টায় ১০ কিমি/ঘন্টা বেগে উত্তর দিকে সরে গেছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১-১.৫ মিটারের জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এতে দক্ষিণ উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের নিচু অঞ্চলগুলোকে প্লাবিত করবে। বাপটলা এবং কৃষ্ণা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ গতিবেগ নিয়ে ঝড়টি বয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৯০-১০০ কিমি, প্রতি ঘন্টায় ১১০ কিমি।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আটটি জেলার জন্য সর্বচ্চো সতর্কতা জারি করেছে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে, তিরুপতি, নেলোর, প্রকাশম, বাপটলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, কোনাসিমা এবং কাকিনাদা। পুদুচেরির উপকূলীয় অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি।
রেড্ডি বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত জেলাগুলোর জন্য বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের জন্য প্রত্যেকে ২ কোটি রূপি দেওয়া হবে। নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের থাকার জন্য ৩০০ টিরও বেশি ত্রাণ শিবির প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় সব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেছেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরো দলও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র সতর্ক করেছেন, উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশের শহরগুলোতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত (৩০-৪০সেন্টিমিটার) হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ছোট ও মাঝারি গাছ ভেঙে পড়তে পারে। এ ছাড়া বাড়ি-ঘরের বড় আকারের ক্ষতিসহ টেলিফোন ও বৈদ্যুতিক খুঁটির আংশিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চেন্নাই বিমানবন্দর আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কিছু ভিডিও-তে দেখা গেছে বৃষ্টির কারণে বিমানবন্দরের রানওয়েতে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আজ রাত ১১ টা পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। স্কুল, কলেজ এবং সরকারি অফিসগুলো বন্ধ রয়েছে। সরকার বেসরকারি সংস্থাগুলোর কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করার অনুরোধ করেছে। ওড়িশা সরকারও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দক্ষিণের জেলাগুলোতে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি