,

ঘূর্ণিঝড় দানা: চার বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ উপকূলের ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে,

বুধবার দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড় দানা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

সে সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘন্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় দানা আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আরো ঘণীভূত হতে পারে।

ক্রমাগত শক্তি সঞ্চয় করে এই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র বুধবার রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

তাদের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ভারতের পুরি ও সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তখন বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।

গত সোমবার আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির পর তা ধাপে ধাপে শক্তিশালী হয়ে বুধবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পায়।

তখন সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় ‘দানা’। এটা কাতারের দেওয়া নাম, যার অর্থ অতি সুন্দর ও মূল্যবান মুক্তা।

আবহাওয়া অফিস বলেছে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বৃষ্টি হতে পারে।

এ সময় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দেশের সর্বোচ্চ ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ফেনীতে ১৯ মিলিমিটারসহ দেশের দুয়েক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে।

তবে বুধবার দুপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে, সঙ্গে বাতাস বইছে।

সবশেষ গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বাংলাদেশ উপকূল ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে। ওই ঝড়ের তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর