,

গোপালগঞ্জে ৩ টি আসনে মাঠে নেই বিএনপি প্রার্থীরা

গোপালগঞ্জে ৩ টি আসনে মাঠে নেই বিএনপি প্রার্থীরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের তিনটি সংসদীয় মাঠে নেই বিএনপির প্রার্থীরা। নির্বাচনী এলাকার কোথাও কোন পোস্টার টাঙ্গানো হয়নি। প্রার্থীদের পক্ষে নেই কোন মাইকিং ও প্রচার প্রচারণা। ওঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে না প্রার্থীদের।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জম্মস্থান গোপালগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জেলা। গোপালগঞ্জ জেলায় পাঁচটি উপজেলা নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। জেলার তিনটি আসনই ভিআইপি আসন।

বিগত সব নির্বাচনে এ তিনটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবারও ওই তিনটি আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা।

গোপালগঞ্জ ১ আসন: গোপালগঞ্জ ১ আসন- মুকসুদপুর উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কাশিয়ানী উপজেলার ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লে. কর্ণেল (অবঃ) ফারুক খান। এর আগে তিনি এ আসন থেকে পর পর চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-র প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এ আসনের বিএনপি’র সাংসদ শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর। বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের কাছে মনোনয়ন চান। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে শরফুজ্জামান প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়। এতে সেলিমুজ্জামানের অনুসারি ক্ষুব্ধ কর্মী সমর্থকরা শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও ছেলের উপর হামলা চালায়। প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত শরফুজ্জামান ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

অপরদিকে, জেলা বিএনপি সরফুজ্জামানকে মনোনয়ন দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকায় অগ্নিসংযোগ এবং তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে নেতা-কর্মীদের মাঝে নির্বাচনকে ঘিরে কোন আগ্রহ নেই বলে নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়।

গোপালগঞ্জ ২ আসন: গোপালগঞ্জ ২ আসন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২১ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কাশিয়ানী উপজেলার ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১১ হাজার। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম এ আসন থেকে পর পর ৭বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জেলা বিএনপি-র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এবার বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান। এলাকার মানুষ ও স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে কোন যোগাযোগ না রাখা এবং বিপদ-আপদে তাকে পাশে না থাকায় সিরাজুল ইসলামকেও অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। ফলে দলের অভ্যন্তরে অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েন। তিনি বর্তমানে গোপালগঞ্জে তার বাড়ীতে অবস্থান করলেও-মাঠে নেই তিনি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট চেয়ে মাঝে মধ্যে তিনি প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন। এছাড়া দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নেই কোন আগ্রহ। উৎসাহ ও উদ্দীপনা। এরআগে ৮ম ও ৯ম সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পান কিন্তু ওইসব নির্বাচনেও তার জামানাত বাজেয়াপ্ত হয়।

গোপালগঞ্জ ৩ আসন: গোপালগঞ্জ ৩ আসন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কোটালীপাড়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬০ জন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ আসন এটি। তিনি এ আসনটি থেকে পরপর ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানী এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন। এর আগেও তিনি এ অসনে নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু তখন তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। এ আসনে নেই কোন প্রচার প্রচারণা।

গোপালগঞ্জের তিনটি আসন ভিআইপি আসন হলেও দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এসব আসনে কোন সহিংসতার নেই। এলাকায় রয়েছে সুন্দর নির্বাচনী পরিবেশ।

এই বিভাগের আরও খবর