,

‘গৃহবধূ হত্যা’, লাশ পৌঁছে দিতে এসে স্বামী-শ্বাশুড়ি আটক

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ তার বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি।

আজ বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। নিহত পপি ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

আটক হওয়ারা হলেন- নিহত পপির স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতি গ্রামে।

এর আগে, মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে ‘হত্যা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত পপির স্বজনরা।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে শ্যালক সোহাগকে রায়হান ফোন করে জানান, পপি জ্ঞান হারিয়েছেন। খবর পেয়ে সোহাগ ঢাকা থেকে মির্জাপুরের উদ্দেশে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে পপি মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। দুপুর ২টার দিকে পপির মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছান। চলে মরদেহ দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। তবে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা। এতে সন্দেহ হলে রায়হান ও তার মা আবেদা খাতুনকে আটক করা হয়। আজ বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের মা রিজিয়া বেগম বলেন, ‘দেড় বছর আগে রায়হান ও পপির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রায়হান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে তারা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাড়া বাসায় পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার জন্য পপিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। পপিকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রায়হান ও তার পরিবারের লোকজন।’ মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে। তিনি আরও জানান, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর