কোটালাপাড়া প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে উত্তাপ ছড়াচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হাওয়া। সম্ভাব্য প্রায় তিন ডজন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। মনোনয়ন পেতে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সিনিয়র নেতাদের মন রক্ষার চেষ্টা করছেন। এসব সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যানার, পোস্টার, তোরণ দিয়ে ঢেকে ফেলেছে গোটা উপজেলা। বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন। এসব প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরাও বসে নেই। নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী এখনও মাঠে নামেননি। এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক মাঠে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমান হাজরা, জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা দেবদুলাল বসু পল্টু, আওয়ামী লীগ নেতা কমল সেন, জাহাঙ্গীর আলম খান, শেখ রাসেল কলেজের অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ বাড়ৈ, কাজী মন্টু কলেজের অধ্যক্ষ বিমেলন্দু সরকার, অ্যাডভোকেট নিখিল দত্ত, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া, কামরুল ইসলাম বাদল, মাইকেল ওঝা, খোকন বালা, উত্তম বাড়ৈ, হান্নান শেখ, ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক চৌধুরী মনির, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা নারায়ণ চন্দ্র দাম, সর্বানন্দ বৈদ্য, প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান খান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা, ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস স্বপ্নীল, যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা, কৃষকলীগ নেতা অরুন মল্লিক।
এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী সরকার, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেনুকা বিশ্বাস, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগম, পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি লিমা আজিজ, কাজী মন্টু কলেজের প্রভাষক গুলশান আরা রানী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্তিলতা বাড়ৈ রাজনৈতিক মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।
মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে পাঁচ বছর ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও সহযোগিতায় উপজেলাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করেছি। তিনি যদি আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে আমাকে মনোনয়ন দেবেন। আমাকে মনোনয়ন না দিলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, দু’বার উপজেলা নির্বাচন করে একবার জয়লাভ করেছি। শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা সবাই মিলে তার নির্বাচন করব।
ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, দীর্ঘদিন কলেজ ও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। এরপর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছি। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পাঁচ বছর ধরে কোটালীপাড়াবাসীর সেবা করে আসছি। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেন তাহলে আগামী দিনেও এ জনপদের মানুষের পাশে থেকে সেবা করব।
জেলা পরিষদ সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টু বলেন, জনগণের সেবা করার জন্যই রাজনীতিতে এসেছি। মানবতার জননী শেখ হাসিনা যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে একটি আধুনিক কোটালীপাড়া গড়ে তুলব। ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা কমল সেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করছি। একবার উপজেলা নির্বাচন করেছি। আমার কাজের মূল্যায়ন হিসেবে আশা করি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন। ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস স্বপ্নীল বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আমি দেশপ্রেম থেকেই রাজনীতিতে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী সুযোগ দিলে জনগণের সেবা করতে চাই। গুলশান আরা রানী বলেন, জননেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত হয়ে নারী উন্নয়নে কাজ করব।