লিয়াকত হোসেন (লিংকন): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতে কাশিয়ানীতে বইতে শুরু করেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হাওয়া। আগামী মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)’র এমন ঘোষণায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গন। মনোনয়ন যুদ্ধে নেমেছেন প্রার্থীরা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রায় তিন ডজন প্রার্থী। তারা দলের স্থানীয় নেতাকর্মীসহ উচ্চপর্যায়েও যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন এবং জনগণের সাথে কুশল বিনিময় অব্যাহত রেখেছেন। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। রাস্তা-ঘাটে, হাট-বাজারে রঙ-বেরঙের ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার সেঁটেছেন। শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ও দোয়া চেয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগ ব্যতিত অন্য কোন দলের প্রার্থীরা এখন পর্যন্ত মাঠে নামেনি।
কাশিয়ানীতে ধীরে ধীরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। উপজেলা সদরসহ পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার ও চায়ের দোকানে এখন চলছে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনা এবং বিচার-বিশ্লেষণ। দলীয় মনোনয়ন কে কে পাচ্ছেন?। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে না এলেও গোপনে গোপনে প্রস্ততি নিচ্ছেন। প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেকটা নীরবে। এলাকায় যাদের তেমন একটা দেখা মেলে না এবং তরুণমুখ এমন অনেককে এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। অনেকে দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করার জন্য একদল থেকে আরেক দলের যোগদান করেছেন।
প্রার্থীদের কাছে ভোটারদের পাশাপাশি কদর বেড়েছে হাইকমান্ড নেতাদের। ভোটের আগে মনোনয়ন যুদ্ধে যিনি জয়ী হবেন তিনিই এগিয়ে থাকবেন। মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এমনটিই মনে করছেন প্রার্থীরা। তাই আগে থেকেই দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে সরব প্রার্থীরা। নির্বাচনী মাঠ সরব হলেও তাদের এ তৎপরতা ভোটারদের ঘিরে নয়। ভোটের মাঠে টিকে থাকতে দলীয় নেতাদের আশির্বাদ পেতে প্রার্থীদের এমন তৎপরতা। এখন থেকেই নানাভাবে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এছাড়াও নেতাদের অবগত করছেন দলের জন্য নিজের অবদান। নির্বাচনের মনোনয়ন পেলে দলের জন্য আরও নিবেদিত হবেন বলে দলীয় নেতাদের এমন নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে-বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জানে আলম (বিরু) মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. মোক্তার হোসেন, বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামচুন্নাহার মিনা জামান, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর (হিল্টু), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক ফারুক আহমেদ (জাপানী ফারুক), জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং সমাজসেবক আলহাজ্ব মুন্শী ওয়াহিদুজ্জামান, কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী খোকন, এম. এ খালেক কলেজের সাবেক ভিপি ও সাবেক থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বর্তমান থানা যুবলীগের সভাপতি কাজী নুরুল আমিন (তুহিন কাজী), ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম আমিন ও সাবেক এমপি মরহুম নুরুল কাদের জুন্নু মুন্সীর পুত্র ও থানা আওয়ামী লীগের সদস্য আনোয়ারুল কাদির রাজ ও কাইসুর রহমান সিদ্দিকী সোহাগ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকেই আমি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এখন সভাপতি হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। তবে জীবনের শেষ বয়সে এসে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে জনগণের আরো পাশে থাকতে চাই। তাই এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন এবং মনোনয়ন দেন তাহলে কাশিয়ানীকে একটি আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।’