,

কাশিয়ানীতে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা ।

লিয়াকত হোসেন লিংকন:  গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ৯৪ নং হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ফলে যে কোনো সময় বিদ্যালয়ের ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। ভবন ধসের আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৯২ জন শিক্ষার্থী এবং ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের পিলারগুলো নড়বড়ে, ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে গেছে। কক্ষের ভেতরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। বৃষ্টির পানিতে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। পাশের রাস্তা দিয়ে ভারি কোন যানবাহন গেলে ভবনটি কাপঁতে থাকে। এমন অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে এই বিদ্যালয় পাঠদান করানো হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অমিত ঢালী জানায়, ‘আমাদের স্কুলের বিল্ডিং পুরানো হয়ে গেছে। প্রায়ই ছাদ থেকে প্লাষ্টার খসে পড়ে। সব সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছি।’

শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিশ^জিত সরকার বলেন, ‘স্কুলের ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পল্লী বিশ্বাস জানান, বিদ্যালয়ের ভবনটি ১৯৯৭ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হরিদাস বিশ্বাস বলেন, ‘ভবনটিতে এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলতে থাকলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে কোন ফল হয়নি।’

উপজেলার হাতিয়াড়া ইউপি চেয়ারম্যান দেবদুলাল বিশ্বাস বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটির যে অবস্থা যে কোন সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র বালা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর