,

কাশিয়ানীতে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহ বাকপ্রতিবন্ধীকে গণপিটুনি

লিয়াকত হোসেন লিংকন: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে কুদ্দুস শেখ (৪০) নামে বোরকা পরিহিত এক বাকপ্রতিবন্ধীকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গণপিটুনির শিকার ওই ব্যক্তি বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়নের কাহালপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ শেখের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে উপজেলার পরানপুর গ্রামে বোরকা পরিহিত ওই বাকপ্রতিবন্ধী ঘোরাফিরা করছিলেন। একপর্যায়ে সে ওই গ্রামের শহীদ কাজীর বাড়িতে প্রবেশ করলে সন্দেহ হওয়ায় তাকে আটক করেন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়া তার কথা বুঝতে পারেনি। পরে তাকে সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয় এবং পরানপুর গরুরহাটের হাসিল ঘরে তাকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

ওই বাকপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস শেখের মেয়ে তুলনা বেগম দৈনিক যুগান্তরকে জানান, ১০-১৫ বছর আগে গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম এলাকার কিছু হিজড়া জনগোষ্ঠীর লোকেরা তাকে জোরপূর্বক ধরে ভ্যাকসিন দিয়ে হিজড়ায় রুপান্তরিত করে তাদের দলভূক্ত করেন। এরপর তিনি সুযোগ বুঝে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। এরপর থেকে হিজড়াদের ভয়ে নিজেকে আত্মগোপনে রাখতে বাইরে বের হলেই বোরকা পরেন। এখন ভিক্ষা করলেও এক সময় তিনি এলাকায় ভ্যানগাড়িতে করে ঝালমুড়ি-চানাচুর বিক্রি করতেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রাম শ্বশুর বাড়ি থেকে মোল্লাহাট নিজ বাড়ির উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।

বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার আটজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বাকপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস শেখের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘কুদুস শেখ একজন বাকপ্রতিবন্ধী। পেশায় ভিক্ষা করেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভিক্ষার জন্যই ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন তিনি।’

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান রহমান জানান, ছেলেধরা সন্দেহ করে স্থানীয় তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছেন। তিনি একজন বাকপ্রতিবন্ধী। বর্তমান তিনি থানা হেফাজতে আছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার পরিবারের লোকজনের সাথেও যোগাযোগ চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর