,

এক বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক মৌচাক

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনের চারদিক, বারান্দা, কার্নিশ এমনকি জানালার সানশেড যেদিকেই চোখ যায় শুধু মৌচাক আর মৌচাক। শুধু ভবন নয়, বিদ্যালয় চত্বরের আম, শিমুল আর নারিকেলসহ প্রায় সব গাছের ডালে ঝুলছে মৌচাক। এমন দৃশ্য কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের চৌদ্দঘড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি, বর্তমানে বিদ্যালয় চত্বরে তিন শতাধিক মৌচাক রয়েছে। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কে রয়েছেন। বছরের প্রথম দিন বই উৎসবকে ঘিরে এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে।

বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক সোহেল রানা জানান, মৌমাছির ভয়ে তারা প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষের জানালা বন্ধ রাখেন। শিক্ষকরাও ভয়ে অফিস কক্ষের জানালা বন্ধ রাখেন। মাঝেমধ্যে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়ানোর চেষ্টা করলেও কোনও ফল পাননি তারা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌদ্দঘড়ি গ্রামের এই বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতি বছর এই গ্রামে সরিষা আবাদ হওয়ায় পুরো গ্রামে অসংখ্য মৌচাক বসে। এই বিদ্যালয় ভবনসহ আশপাশের গাছপালাতেও মৌচাক বসে। তবে এ বছর বিদ্যালয় চত্বরে মৌচাকের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনের চারপাশসহ বিভিন্ন অংশে ছোট বড় ৬০টির বেশি মৌচাক রয়েছে। আর বিদ্যালয় চত্বরে থাকা শিমুল, কাঁঠাল, আম ও নারিকেল গাছ মিলে তিন শতাধিক মৌচাক বসেছে। বিদ্যালয় চত্বরে প্রতিনিয়ত মৌমাছি উড়ে বেড়ায়। দিনভর চলে ভোঁ ভোঁ শব্দ।

প্রধান শিক্ষক মিন্টু চন্দ্র সেন বলেন, ‘অসংখ্য মৌচাকে থাকা অনেক মৌমাছি সবসময় উড়তে থাকে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কে থাকি। অনেক সময় বাতাসের আঘাতে মৌমাছি উড়ে শিক্ষার্থীদের কামড় দেয়। ফলে অভিভাবকরা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। আবার কেউ মৌচাকে ঢিল ছুঁড়লে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।’

‘প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এসব মৌচাক থাকে। মধু সংগ্রহকারীরা এসে মধু সংগ্রহ করার পর এসব মৌমাছি চলে যায়’ যোগ করেন প্রধান শিক্ষক।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও চৌদ্দঘড়ি গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গ্রামে সরিষার চাষ হওয়ায় বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় মৌমাছির আগমন ঘটে। তবে এ বছর মৌচাকের পরিমাণ বেশি। শুধু বিদ্যালয়ে নয়, গ্রামের অনেক বাড়িঘর ও গাছপালায় মৌচাক বসেছে। মৌমাছির আক্রমণের ভয়ে অনেকে আতঙ্কে আছেন।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি খবর নেবো। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সংকট থাকলে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় এসব মৌচাক অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর