ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। কৌশলে এক নারীর মাধ্যমে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছে নবজাতকের পরিবার।

নবজাতক চুরির বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নবজাতকের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ৮টায় উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বহরপুর গ্রামের রাশেদ আলীর স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩১) প্রসববেদনা উঠলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। ৯টার দিকে তিনি একটি মেয়ে শিশুর জন্ম দেন। দুই ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে যান।

বাড়ি আসার পর অসুস্থবোধ করলে পুনরায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় নবজাতকসহ তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসমা খান তাকে চিকিৎসা দেন।

রোজিনার শয্যার পাশে ছিলেন তার পরিবারের এক সদস্য। তিনি একটি কাজে বাইরে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা কৌশলে অজ্ঞাত এক নারীর মাধ্যমে নবজাতককে চুরি করে নিয়ে যায়। আধাঘণ্টা পর প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা শিশু চুরির বিষয়টি টের পান।

খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শিশুটির স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে ঘটনাটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানানো হয়।

প্রসূতি রোজিনা বেগম জানান, ২০-২২ বছর বয়সের একজন তরুণী তার কাছে এসে বলেন, ‘ও খুব সুন্দর হয়েছে। দেখতে আমার এক ভাগনের মতো। ওকে দেখে আমার ভাগনের কথা মনে পড়ছে। আমি ওকে একটু আদর করি, একটু কোলে নিই।’ কথাগুলো বলে তরুণীটি তার সন্তানকে কোলে নিয়ে রোজিনার মাথার দিকে বিছানার পাশে বসেন।

তিনি জানান, ২-৩ মিনিটের জন্য তিনি পাস ফিরে শুয়েছিলেন। এরপর ঘাড় ফিরিয়ে দেখেন, তরুণীও নেই, তার সদ্যোজাত সন্তানও নেই।

ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসমা খান জানান, এর আগে এই জাতীয় কোনো ঘটনা এ হাসপাতালে ঘটেনি। এটি দুর্ভাগ্যজনক। শিশুটি উদ্ধার করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ চেষ্টা করছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আসমা খানম জানান, হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকি জানান, আশপাশের প্রতিটি থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি মামলা করা হয়েছে।