,

আ.লীগ ও জাপা নেতার বিরুদ্ধে লড়তে চান ইজিবাইক চালক

ইজিবাইক চালক রায়হান শাহ।

জেলা প্রতিনিধি, নাটোর: দিনক্ষণ নির্ধারিত। আগামী ১৭ অক্টোবর হচ্ছে নাটোর জেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিন প্রার্থী।

তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান, প্রায় ১৯ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব ও জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নবী মৃধা ও গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড় এলাকার বাসিন্দা ইজিবাইক চালক রায়হান শাহ।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ওই ইজিবাইক চালক নাটোর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাটোরজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ৪২ বছর বয়সী রায়হান শাহ পেশায় কৃষক হলেও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালান। এর আগেও তিনি গুরুদাসপুর পৌরসভায় মেয়র পদে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। তবে জমা দিতে দেরি হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি।

চেয়ারম্যান পদের এই প্রার্থী জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ওই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এ বিষয়ে কেউ তাকে প্রলুব্ধ করেনি। যাচাই-বাছাইয়ে টিকলে তিনি নিম্নশ্রেণির প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের হাতে-পায়ে ধরে ভোট চাইবেন। জয়ী হলে জীবনের সব উদ্যম আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জনগণের কল্যাণ করার চেষ্টা করবেন।

এদিকে অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান ছাড়াও নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা নাটোর জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ডলার।

জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ধারণা ছিল, যেহেতু সাজেদুর রহমান খান বয়সজনিত কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না, সেক্ষেত্রে হয়তো নতুন কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। তবে দলের কেন্দ্র থেকে সাজেদুর রহমান খানকেই মনোনয়ন দেওয়ায় বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারছেন না দলের অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে সাজেদুর রহমান যাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হন সেজন্যই একাধিক প্রার্থীকে মাঠে নামানো হয়েছে- এমন ধারণা অনেকের।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক আকরামুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তাকে জয়ী করার কোনও বিকল্প নেই। ভোটের মাঠে কোনোভাবেই যাতে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থীকে বেকায়দায় পড়তে না হয় সেজন্য ঐক্যবদ্ধ রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে কেউ যদি এসব ব্যক্তিকে প্রলুব্ধ করে প্রার্থী করায় তাতেও লাভ হবে না।

এ বিষয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশী সিরাজুল ইসলাম ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম স্বপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করেছেন তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রার্থী কে হলো তা বিবেচ্য নয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত ব্যক্তিকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ও তৎপর রয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন দাবি করেন, রায়হান শাহ এর আগেও পৌর মেয়র পদে প্রার্থী হলেও ভোট করতে পারেননি। রায়হান শাহ যদি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকেও, তাতে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া সাজেদুর রহমান খানই বিজয়ী হবেন। তাকে কেউ প্রার্থী হতে প্রলুব্ধ করুক অথবা তিনি নিজেই প্রার্থী হন, নৌকা প্রার্থীর ভোটে তা কোনও প্রভাব ফেলবে না। এমনকি নুরুন্নবী মৃধা ও রায়হান শাহ উভয়ের চেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হবেন সাজেদুর রহমান খান।

নুরুন্নবী মৃধা জানান, প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শের পথ ধরে তিনি নাটোর জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। শেষ পর্যন্ত তিনি ভোটের মাঠে থাকতে চান।

এই বিভাগের আরও খবর