জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বিরোধপূর্ণ সেবা আশ্রমে কীর্তন গানের আয়োজন চলছে।
এতে ওই এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপজেলার বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের হরিনাহাটি গ্রামের সুদানন্দ সেবাশ্রমটি দীর্ঘদিন ধরে হরিমোহন বাড়ৈ রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছিলেন। বর্তমানে ওই সেবাশ্রমের নাম পরিবর্তন করে রাধাগোবিন্দ জিউর মন্দির নাম দিয়ে এলাকার বিনয় বৈরাগী সেবাশ্রমটি দখলের পাঁয়তারা করছেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রীতি ওই সেবাশ্রমে বিনয় বৈরাগীর পক্ষ থেকে কীর্তন গানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) থেকে তিন দিনব্যাপী এ কীর্তন গান শুরুর কথা রয়েছে।
এদিকে, গত ১১ অক্টোবর হরিমোহন বাড়ৈ গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে কীর্তনগান আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা করেন। আদালত থানার ওসিকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আদেশ দেন।
হরিমোহন বাড়ৈ বলেন, ১৫ বছর আগে আমাদের পৈত্রিক জায়গায় আমার গুরু ঠাকুর সুদানন্দর নামে সেবাশ্রম গড়ে তুলে পূজা অর্চনা করে আসছি। হঠাৎ করে বিনয় বৈরাগী জোরপূর্বক সেবা আশ্রমের সাইনবোর্ড পাল্টে রাধাগোবিন্দ জিউর মন্দির নাম লিখে দিয়েছেন। তিনি আশ্রমটি নিজেদের বলে দাবি করছেন। তিনি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সেখানে কীর্তন গানের আয়োজন করেছেন। আমি আদালতে মামলা করেছি। আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। গানের সাজসজ্জার কাজ করতেছেন।
এ বিষয়ে বিনয় বৈরাগীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, হরিমোহন বাড়ৈ যে জায়গাটি নিজেদের বলে দাবি করছেন সেটি অর্পিত সম্পত্তি। আমরা এই অর্পিত সম্পত্তির ওপর রাধাগোবিন্দ জিউর মন্দির গড়ে তুলেছি।
হরিনাহাটি গ্রামের সুভাষ মল্লিক ও প্রফুল্ল বৈদ্য বলেন, সুদানন্দ সেবাশ্রমের জায়গাটি হরিমোহন বাড়ৈ ও আমাদের পূর্বপুরুষদের। আমরাই সুদানন্দ সেবাশ্রম গড়ে তুলেছি। এই সেবাশ্রমে বেআইনিভাবে বিনয় বৈরাগী সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।
গৃহিনী উষা বৈদ্য বলেন, শুক্রবার থেকে এখানে কীর্তন গান শুরু হলে নিশ্চিত মারামারি হবে। আমরা এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছি। আমরা চাই প্রশাসন যেন কীর্তন গান বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
কোটালীপাড়া থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞার কথা আমি সরেজমিনে গিয়ে উভয়পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। যদি কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-মেহেদী হাসানাত