,

চুরির মামলা তদন্তে গিয়ে ‘ধর্ষণ’

জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর: চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার সাবেক সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সজল মাহমুদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় সোমবার উপজেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, বাদী অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার জন্য সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তিনি দেশে এসে স্থায়ীভাবে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ অক্টোবর তাদের বাড়িতে চুরি হলে বাদী থানায় জানান। ২৪ অক্টোবর রাতে এএসআই মো. সজল তাদের বাড়ি ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে তার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পরবর্তীতে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। ৩০ জানুয়ারি অভিযুক্ত এএসআই তাকে ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিকেল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যান।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি বাদী ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব খুলে বলেন। ওসি মোবাইল ফোনে সজলকে ডেকে আনেন। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়ার্টারে নিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি স্বাক্ষর করার পর সজল বলে ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছে এবং তালাক দিয়েছ।’ পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে মারধর করে থানা থেকে বের করে দেন অভিযুক্ত।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে ভুক্তভোগী জানতে পারেন যে, তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত ১২ ফেব্রুয়ারি মামলা করতে গেলে তা আদালতের মাধ্যমে করার পরামর্শ দেয় ভাঙ্গা থানা।

অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ জানান, ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে, তার কাছে কাবিন নামাও আছে।

তিনি বলেন, ‘আমার আগের স্ত্রী আছে। বড় স্ত্রীর সম্মতিতে দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। এখনও দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিইনি। কেন তিনি আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে কেন মামলা দিলেন তা তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।’

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেললাউদ্দিন ভুইয়া বলেন, প্রশাসনিক কারনে এএসআই সজলকে গত ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে বদলি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা এখনও পাইনি। তবে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে শুনেছি।

ফরিদপুর বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী জানিয়েছেন, এ মামলাটি তারা পরিচালনা করবে।

এই বিভাগের আরও খবর