,

খেলার মাঠে হালচাষ!

জামালপুর যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খেলার মাঠটি হালচাষ করে ব্যবহারের অনুপযোগী করা হয়েছে

বিডিনিউজ ১০ ডটকম, জামালপুর: জামালপুর জেলার একমাত্র যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খেলার মাঠটি রাতের অন্ধকারে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে হালচাষ করে ব্যবহারের পুরোপুরি অনুপযোগী করে রাখা হয়েছে। নির্ধারিত ক্লাসের পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদন করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ওই কেন্দ্রের আবাসিক- অনাবাসিক প্রশিক্ষণার্থীরা।

অভিযোগ ওঠেছে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের জামালপুরের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) এনায়েত করিম ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ওই মাঠের তিন বিঘা জমির পুরোটাই রাতের অন্ধকারে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ করে প্রায় ১০ বছর আগের প্রতিষ্ঠিত মাঠটি ধ্বংস করে দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রশিক্ষণার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর কৃষিবিদ মিজানুর রহমান অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পত্র দিয়ে অবহিত করেছেন।

শহরের বেলটিয়া এলাকায় অবস্থিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর, উপ-পরিচালকের কার্যালয় ও র‌্যাব-১৪-এর একটি ক্যাম্প রয়েছে। সরকারি ৩টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ছাড়াও এখানে আবাসিক-অনাবাসিক প্রায় দুইশ’ প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে। এ ছাড়াও র‌্যাব ক্যাম্পের প্রায় ৮০ জন সদস্য ও যুব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরও ৬০-৭০ জন সদস্য কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বসবাস করেন।

এই যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আবাসিক-অনাবাসিক প্রশিক্ষণার্থীদের মাঠ প্রশিক্ষণ, নিয়মিত খেলাধুলার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর ১০ বছর আগে সরকারিভাবে একটি মাঠ তৈরি করা হয়। মাঠের চারপাশে রয়েছে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন, অফিস, আবাসিক কোয়ার্টার ও প্রশিক্ষণার্থীদের হোস্টেল।

যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মচারী তকদীর হোসেন ও আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এ মাঠে আবাসিক হোস্টেলের প্রশিক্ষণার্থীরা ছাড়াও আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করত।

প্রশিক্ষণার্থী আনছার আলী, জাকিরুল ও সুজনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তাদের মাঠ প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলার একমাত্র মাঠটি শীত মৌসুমের শুরুতেই হালচাষ করে ধ্বংস করার কারণে বিকেল বেলাটা তারা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। কেন্দ্রের পোলট্রি ও ডেইরি ইউনিট সহায়ক দীপক কুমার রায় বলেন, মাঠের ঘাস ধ্বংস হওয়ার কারণে প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের ব্যবহূত গবাদিপশু ও টার্কি মুরগির খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, নানা কারণে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্যাম্পাসটি এমনিতেই সংকুচিত। এই ক্যাম্পাসের মাঠের এক পাশে প্রশিক্ষাণার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে সবজি বাগান রয়েছে। কোনো বিশেষ প্রয়োজন বা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ মাঠটি ধ্বংস করা উচিত হয়নি। বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

এ ব্যাপারে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের জামালপুরের উপপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) এনায়েত করিম পুরো মাঠটি হালচাষ করার কথা স্বীকার করে বলেন, নতুন ফুলের জাত ও সবজি বাগানের জন্য মাঠে হাল দেওয়া হলেও পুরো জমিতে আবাদ করা হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর