,

কাশিয়ানী থেকে পাচারকালে ৪০ বস্তা সার আটক

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে নসিমনে করে পাচারকালে ৪০ বস্তা ইউরিয়া সার আটক করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে মুকসুদপুর উপজেলার পুরাতন মুকসুদপুর এলাকা থেকে সার ভর্তি নসিমন আটক করা হয়।

কাশিয়ানী উপজেলার বাথানডাঙ্গা বাজারে বিসিআইসি সারের ডিলার মেসার্স সুবর্ণা আলম এন্টারপ্রাইজ থেকে সারগুলো ফরিদপুরের সালথার যদুনন্দী বাজারে বিক্রির জন্য নেয়া হচ্ছিল।

নসিমন চালক ইসলাম শেখ জানান, কাশিয়ানী উপজেলার বাথানডাঙ্গা বাজারের সার ব্যবসায়ী আলমগীরের কাছে থেকে সার নিয়ে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী বাজারে যাচ্ছিলেন। সারগুলো যদুনন্দী বাজারের ব্যবসায়ী বাশারের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাথানডাঙ্গা বাজারের ওই ডিলার থেকে নসিমনে করে সার নিয়ে দেন।

কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. রফিকুল মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করে আসছেন- ডিলারের কাছে গিয়ে সার পাচ্ছেন না তারা। সার কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে আমার কাছে খবর আসে মহেশপুর ইউনিয়ন সারের ডিলার আলমগীরের গুদাম থেকে নছিমনে করে ৪০ বস্তা সার নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি আটককারীদের নসিমনসহ সার ধরে কাশিয়ানী থানায় নিয়ে যেতে বলি। তারা নছিমনসহ সার কাশিয়ানী থানায় নিয়ে যায়। আমি বিষয়টি আমার ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করি। কৃষি কর্মকর্তা সারগুলো থানা হেফাজতে রাখতে বললেন এবং ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ^স্ত করেন। সে মোতাবেক ৪০ বস্তা সারসহ নসিমন থানায় রেখে আসা হয়।

সার আটককারী স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইনামুল বলেন, ‘বাথানডাঙ্গা বাজার থেকে আমরা সার বোঝাই নসিমনকে অনুসরণ করি। কাশিয়ানী উপজেলা পার হয়ে মুকসুদপুর উপজেলার পুরাতন মুকসুদপুরের ফারুক খান উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে আমরা নসিমন থামাই। চালককে প্রশ্ন করি আপনি বাথানডাঙ্গা বাজার থেকে সার নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন। চালক জানালেন- সার নিয়ে যদুনন্দী বাজারে যাচ্ছি। প্রায়ই ওই ডিলারের কাছ থেকে সার নিয়ে যদুনন্দী বাজারে বিক্রি করা হয়। কৃষি অফিসের সাথে ফোনে যোগাযোগ করি। তিনি সার থানায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা নসিমনসহ সার আটক করে থানায় নিয়ে রেখে আসি।

মহেশপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি সারের ডিলার আলমগীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। লোক মুখে শুনেছি। তবে সারগুলো আমার না। হয়তো কেউ শুধু শুধু আমার নাম বলতে পারেন।’ তবে এ প্রতিনিধির কাছে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে মেসার্স সুবর্ণা আলম এন্টারপ্রাইজের গুদাম থেকে নসিমনে সার লোড হচ্ছে।

সার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সনজয় কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পরে থানায় গিয়েছিলাম। শনিবার সরেজমিনে তদন্ত করে বিস্তারিত জানতে পারবো।’

কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, ‘লোকজন সার আটক করে থানায় রেখে গেছেন। এখন পর্যন্ত সঠিক কোন তথ্য পাইনি। কৃষি অফিস থেকেও এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, ‘সার আটকের বিষয় জেনে ওসিকে নসিমন চালকের মাধ্যমে সারের মালিককে খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। সত্যতা প্রমাণিত হলে কৃষি কর্মকতা বাদী হয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা দিবেন। বীজ-সারের ব্যাপারে কোন অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

-লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর