,

কাশিয়ানীতে ‘রুপালী ব্যাংক কর্মকর্তা’ লাপাত্তা!

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে রুপালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। মোহাম্মদ মফিজুর রহমান (৩৫) নামে নিখোঁজ ওই ব্যাংক কর্মকর্তা উপজেলার জয়নগর বাজার রুপালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি একই উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের ফলসি গ্রামে মো. মতিয়ার রহমান মোল্যা ছেলে।

তবে তিনি নিখোঁজ, না আত্মগোপন করেছেন তা নিয়ে চলছে না জল্পনা-কল্পনা। নিখোঁজ ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১ আগস্ট ব্যাংক থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ৯ দিন অতিবাহিত হলেও সন্ধান মেলেনি ওই ব্যাংক কর্মকর্তার। এ ব্যাপারে কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ মফিজুর রহমান ২০১৯ সালের শেষের দিকে রুপালী ব্যাংকের জয়নগর বাজার শাখায় শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন। গত ২৬ জুনে ওই শাখায় নতুন শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা মো. ফাইজুর রহমানকে বদলী (নিযুক্ত) করা হয়। তিনি ১ আগস্ট দায়িত্ব বুঝে নিতে ও যোগদান করতে ব্যাংকে আসলে কর্মরত শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান ব্যাংক থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরের দিন কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যাংকের নবাগত শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান।

একটি সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মফিজুর রহমান ব্যাংক শাখায় বড় ধরণের আর্থিক অনিয়ম করেছেন। ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকার গড়মিল রয়েছে। যে কারণে তিনি আত্মগোপন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনিয়মের বিষয় খতিয়ে দেখতে রুপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম কাজ করছে। তদন্তের পর মোহাম্মদ মফিজুর রহমান নিখোঁজের রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্তমান কর্মরত শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান জানান- পূর্বের শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান নিখোঁজ হওয়ায় কাশিয়ানী থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। ব্যাংকে আর্থিক কোন অনিয়ম আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে প্রধান কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ব্যাংকে এসেছিলেন। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করছেন। তদন্তের স্বার্থে আপাততো এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব শ্রীঘ্রই নিখোঁজের কারণ জানা যাবে।

এদিকে, পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের ইমিগ্রেশন শাখায় ফাইজুর রহমানের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে- ‘নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মুহাম্মদ মফিজুর রহমান ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতি ও আত্মসাতের সাথে জড়িত বলে প্রতীয়মান এবং তিনি যে কোন সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন। তিনি যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

মুহাম্মদ মফিজুর রহমান পরিবার নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের মিয়াপাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। দরজায় তালা দেওয়া দেখতে পাওয়া যায়। যে কারণে তার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, ‘ব্যাংক কর্মকর্তা নিখোঁজের ঘটনায় ব্যাংকের নতুন শাখা ব্যবস্থাপক মো. ফাইজুর রহমান ঘটনার পরের দিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তবে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।’

 

এই বিভাগের আরও খবর