,

কাশিয়ানীতে পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কৃষকরা। খাল-বিল ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছেন না অধিকাংশ কৃষক। গত কয়েকদিন বৃষ্টি হলেও পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নয়। ফলে ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। আবার অনেকে ভ্যান, নছিমন, পিকআপ ও ট্রাকে করে দূরে কোথাও নিয়ে জাগ দিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৮ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গত বছরের তুলনায় এবার ৭১ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ কমে গেছে। পানির অভাবে উপজেলার অধিকাংশ কৃষক পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে কৃষকরা পাট কেটে ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই রেখে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা পাট কেটে জাগ দিতে পারলেও চরাঞ্চলের কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

উপজেলার ভাটিয়াপাড়া, পিংগলিয়া, বরাশুর, পোনা, মাজড়া, ছোটখায়েরকান্দি, রাতইল, চাপ্তা, ঘোনাপাড়া, ধানকোড়া, তিলছড়া, ফুকরা, তারাইল, সাফলীডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে অধিকাংশ কৃষকরা জমি থেকে পাট কাটছে না। এখনো মাঠের পর মাঠ পাট পড়ে আছে। আবার অনেকে পাট কেটে নছিমন, ভ্যান, ঘোড়ার গাড়ি করে দূরের কোন জলাশয়ে পঁচাতে নিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের ছোটখারকান্দি গ্রামের পাট চাষি ফরিদ শেখ বলেন, ‘পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে চাষ করতে হয়েছে। সার-কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এখন আবার পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। পাটচাষে এবার লোকসান হবে।’

উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামের পাট চাষী সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। কম পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের যে অবস্থা তাতে পাটের ভাল দাম পাব না। পাটের গুনগত মান খারাপ হওয়ায় লোকসান গুনতে হবে।’

উপজেলার সবচেয়ে বড় পাটের আড়ৎ ভাটিয়াপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ২৬ শ’ থেকে ২৯ শ’ টাকা করে পাটের মণ বিক্রি হয়েছে। তবে দাম ভাল হলেও কৃষকরা পানি সংকটের কারণে পাটের গুনগত মান নিয়ে লোকসানের আশংকা করছে। ফলে লোকসান গুনতে হবে অধিকাংশ কৃষকের।

কাশিয়ানী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী এজাজুল করীম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার খাল-বিলে পানি কম। যে কারণে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পঁচানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে আগামী বছর পাট চাষে এর প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

লিয়াকত হোসেন (লিংকন)

এই বিভাগের আরও খবর