জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: শাহজাহান মুন্সী দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ওয়ার্কশপের ব্যবসা করে আসছেন। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পুঁজি আর ৭২ লাখ টাকা ব্যাংক লোন নিয়ে গড়ে তুলেছেন ওয়ার্কসপের দোকান। সেই দোকান নিয়ে আরও বড় স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু শাহজাহানের সেই স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হল। গত ২৩ মার্চ ভোরে কাশিয়ানী সদর বাজারে অবস্থিত মেসার্স খালেক এন্টারপ্রাইজ এন্ড শাহজাহান ইঞ্জিরিয়ারিং ওয়ার্কশপে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরে পুড়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিঃস্ব পঙ্গু ব্যবসায়ী শাহজাহান মুন্সী। তিনি বলেন, ‘আমি আজ দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অনেক কষ্ট করে তিলে তিলে দোকানটি করেছি। দোকানটি আরও বড় করতে ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছিলাম। সব পুড়ে গেছে, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমার বেঁচে থাকার শেষ সম্বলও হারিয়ে গেলো।’
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা সদর বাজারে অবস্থিত শাহজাহানের দোকানটি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ভাটিয়াপাড়া ফায়ার ষ্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরআগেই মুহূর্তের মধ্যেই সব পুড়ে যায়। সেখানে ছিল নগদ দেড় লাখ টাকা, মেশিন ও আসবাবপত্র। সব মিলে প্রায় কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ ওই ব্যবসায়ীর। এ দোকানে পাঁচজন লোকের কর্মসংস্থান ছিল। অগ্নিকাণ্ড সবাইকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। একদিন আগেও যিনি কোটিপতি ব্যবসায়ী ছিলেন, সকাল না হতে সেই ব্যবসায়ী ফকির হয়ে গেলেন।
কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া ফায়ার ষ্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করি। এতে দোকানের মেশিন ও আসবাবপত্র পুড়ে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান অগ্নিকান্ডের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী শাহজাহানকে সাহায্যের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদেরও ক্ষতিগ্রস্থ শাহজাহানের পাশ দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
-লিয়াকত হোসেন লিংকন